প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নতুন প্রতারণার ফাঁদ নাইজেরিয়ানদের


প্রকাশিত: ০৮:৪১ এএম, ০৪ এপ্রিল ২০১৬

বিভিন্ন পুরস্কার প্রদানের নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফাঁদ পেতেছে নাইজেরিয়ান নাগরিকদের একটি চক্র। তারা পুরস্কারের প্রতারণা বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করতে বাংলাদেশি মেয়েদের কণ্ঠ ব্যবহার করে যোগাযোগ করত। এছাড়া বাংলাদেশি কয়েকজন তরুণ ও তরুণীর যোগসাজশে প্রতারণায় সুবিধা পাচ্ছে প্রতারক এ চক্রটি।

সম্প্রতি বাংলাদেশি এক ব্যবসায়ীর ৩৮ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় তিন নাইজেরিয়ান তরুণ ও দুই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই এর বিষেশ পুলিশ সুপার এসব কথা জানান।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. আওয়ালু আদামু, অডিবোভাহেমেন জেমস, অলোরুফেমু ডিনেল, মোহাম্মদ আদামু ও এক বাংলাদেশি জয়ন আরা রিয়া।

সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্পেশালাইজড ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, বাংলাদেশে বৈধ ও অবৈধভাবে বসবাসকারী নাইজেরিয়ান কয়েকজন নাগরিক স্ক্যাম (এসএমএস ও ইমেইলের মাধ্যমে) প্রতারণা করে আসছে।

গত ২৭ মার্চ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে পল্টন থানায় এক ব্যবসায়ী মামলা করেন। মামলা নং ৪১। তিনি মামলায় উল্লেখ করেন, পুরস্কারের কথা বলে তার কাছ থেকে ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ৭শ’ ৮৯ টাকা হাতিয়ে নেয়। মামলা দায়েরের পরই তদন্ত দায়িত্ব পায় পিবিআই।

তদন্তের প্রেক্ষিতে পিবিআই গতকাল (রোববার দিবাগত রাত) রাতে অভিযান চালিয়ে শাহআলীর নবাবেরবাগ এলাকা থেকে ওই ৪ নাগরিক ও বাংলাদেশি ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪টি ল্যাপটপ, ৮টি মোবাইল ফোন, ব্যাংকের চেক ও অ্যাকাউন্টের তথ্য, সিম ও পেনড্রাইভ জব্দ করা হয়।

মো. আহসান হাবীব পলাশ আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, দেশের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ছত্রছায়ায় চক্রটি এই প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড করে আসছিল। তারা মূলত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে গ্রাহকদের পুরস্কারের প্রলোভন দেয়। কোকাকোলা লটারি, ইউনাইটেড ন্যাশন্স পুরস্কার, আইসিসি টুর্নামেন্ট পুরস্কার, ইউএনডিপি পুরস্কার প্রাপ্তিসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ পুরস্কারের বার্তা পাঠায়। সেখানে ইমেইল ঠিকানাও দেয়া হয়।

তিনি বলেন, প্রতারকরা কাস্টমস ডিউটি, অর্থ মন্ত্রণালয় হতে টাকা ছাড়, মানি লন্ডারিং মামলায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ভীতি, ফিসিং (ভুয়া ওয়েব পেইজ), সিওটি (কস্ট অব ট্রান্সফার), ৫ শতাংশ ভ্যাট ও অ্যান্টি টেরোরিজমসহ ভিবিন্ন খাতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের টাকা আদায় করে।

পিবিআই এর এ বিশেষ পুলিশ সুপার আরো জানান, এই চক্রের সঙ্গে আরো কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতারদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।

জেইউ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।