তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন

বাকি দুই মরদেহ শনাক্তের দাবি স্বজনদের

ঢামেক প্রতিবেদক
ঢামেক প্রতিবেদক ঢামেক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০২ এএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মৃত চারজনের মধ্যে এখনো দুজনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। যদিও এরমধ্যেই নিহত অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে নিজের চাচা বলে দাবি করেছেন বেলাল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। অন্যদিকে, আরেকজনকে স্বামী বলে দাবি করেছেন মোছা. সাজন আক্তার নামে এক নারী।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে আসেন বেলাল ও সাজন।

নিখোঁজ খোকন মিয়ার স্ত্রী দাবি করা সাজন আক্তার বলেন, আমার স্বামী মো. খোকন মিয়া প্রায় সময়ই পাঞ্জাবি পরতেন। আমি আমার স্বামীর পাঞ্জাবির পোড়া অংশ, মুখমণ্ডল ও শরীর দেখে তাকে শনাক্ত করেছি।

jagonews24

আমার স্বামী গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভাস্তির বিয়ে উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে যান। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে করে তিনি নারায়ণগঞ্জ ফিরে আসছিলেন। একপর্যায়ে আমি তাকে কল দিলে, মোবাইল ফোন বন্ধ পাই।

‘পরে জানতে পারি, ট্রেনে আগুন লেগে চারজন মারা গেছে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে আসি। মর্গে গিয়ে দুটি মরদেহ দেখি। এর মধ্যে একটি মরদেহের পাঞ্জাবী ও মুখমণ্ডল দেখে নিশ্চিত হয়, এটাই আমার স্বামী।

‘আমার স্বামী সব সময় পাঞ্জাবি পরতো। তবে এখানে স্যাররা বলেছেন ডিএনএ টেস্টে ম্যাচিং না হলে আমাদের বডি দেবে না। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় আসতে বলেছে।’

তিনি আরও জানান, আমিও আমার স্বামী নারায়ণগঞ্জের ক্রোনি গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্সটাইলে কাজ করতাম। আমার স্বামী ওই টেক্সটাইলের অ্যাসিস্ট্যান্ট অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে আমরা বিসিক এলাকায় থাকতাম।

অন্যদিকে নিখোঁজ আব্দুর রশিদ ঢালীর (৬০) ভাতিজা দাবি করা বেলাল আহমেদ বলেন, ঢামেকের মর্গে রাখা দুটি মরদেহের একটির কাপড় ও শারীরিক গঠন দেখে বুঝি ইনি-ই আমার চাচা। নেত্রকোনা বড়বাজার এলাকায় তার কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা রয়েছে।

‘কাপড় কেনার জন্য সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে আমার চাচা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরে আমরা টেলিভিশনের খবর দেখে জানতে পারি, ঢাকায় ট্রেনে আগুনের ঘটনায় চারজন মারা গেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আমরা চাচার সঙ্গে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি, কিন্তু মোবাইল ফোন বন্ধ পাই। আজ ঢামেকের মর্গে এসে আমার চাচার মরদেহ শনাক্ত করি।’

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, পরিচয় শনাক্ত না হওয়া দুটি মরদেহ বর্তমানে জরুরি বিভাগে রয়েছে। দুজন মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্তের দাবি করেছেন। তবুও ডিএনএ ক্রসম্যাচিংয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া ছাড়া কোনো মরদেহ হস্তান্তর করা হবে না।

কমলাপুর রেলওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আহাম্মেদ বিশ্বাস বলেন, নিহত বাকি দুজনের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও আরেকজনের ভাতিজা মরদেহ শনাক্ত করেছেন। তবুও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট মরদেহ দুটির ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার পরই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কাজী আল আমিন/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।