অনুমতি ছাড়া কেউ গাছ কাটতে পারবে না: মেয়র আতিক
অনুমতি ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় কেউ গাছ কাটতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমি বার বার বলেছি, গাছ কাটলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমার কাউন্সিলর, ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি, অনুমতি ছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় কেউ গাছ কাটতে পারবে না। গাছ কাটার আগে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ করতে হবে। কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে নগর সবুজায়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র।
তিনি বলেন, গাছের গুরুত্ব আমাদের অনুধাবন করতে হবে। দুঃখজনক হলো আমরা অনেকে গাছের গুরুত্ব বুঝি না। পরিবেশ রক্ষায় এবং জীবনের জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন পেতে গাছের বিকল্প নেই।
ডিএনসিসি মেয়র জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সড়ক ও ফুটপাতে গাছ লাগানো হচ্ছে। বিভিন্ন বস্তিতে প্রায় পাঁচ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। প্রতিটি গাছকে জিপিআরএস অ্যাপের মাধ্যমে আইডি নম্বর দিয়ে রোপণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গাছকে নম্বরিং করা ও জিপিআরএস ম্যাপিং করা হচ্ছে। প্রকৌশল বিভাগ এটি তত্ত্বাবধান করছে। বর্জ্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি খালের পাড়ে গাছ লাগাতে হবে। আমরা এখন যে গাছগুলো লাগাচ্ছি একটা সময় পরে সবুজায়ন হবে, গাছে ফুল হবে, ফল হবে, গাছ ছায়া দেবে, অক্সিজেন দেবে।
মেয়র আরও বলেন, গাছ লাগানো অনেক সহজ, কিন্তু পরিচর্যা করে বড় করে তোলা কঠিন। এখন পর্যন্ত আমরা যেসব গাছ লাগিয়েছি, আমাদের কাছে প্রতিটি গাছের ম্যাপিং আছে। গাছ কত ইঞ্চি লাগানো হয়েছে, কীভাবে বড় হচ্ছে ও পরিচর্যা করা হচ্ছে। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আছে।
ঢাকাকে দৃষ্টিনন্দন করতে সবুজায়নের পাশাপাশি স্ট্রিট আর্ট করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মগবাজার ফ্লাইওভারের পিলারে স্ট্রিট আর্ট করা হয়েছে। মিরপুর জল্লাদখানায় পাকিস্তানিরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করে কুয়ার ভেতরে ফেলে রেখেছিল। সেটি ছিল খুবই ভয়ানক একটি জায়গা। ওখানে ময়লার ভাগাড় ছিল, মাদকাসক্তরা সেখানে নেশা করতো। আমরা জল্লাদখানাটি দৃষ্টিনন্দন করে সাজিয়েছি। আপনারা গেলে দেখতে পাবেন শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শাইখ সিরাজ।
তিনি বলেন, কোন জায়গায় কোন প্রজাতির গাছ লাগানো হবে এটি জানা খুব জরুরি। শহরে রাস্তায় একসময় শুধু ছায়া দেবে এমন জাতের গাছ লাগানো হতো। পরবর্তীতে ফুল ও ফলের গাছও লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়। শহরের সবুজায়নে সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষ করে কাউন্সিলরদের। তাদের গাছগুলো দেখে রাখতে হবে।
শক্তি ফাউন্ডেশনের উপনির্বাহী পরিচালক ইমরান আহমেদ বলেন, সময়ের সঙ্গে বাংলাদেশ একদিকে যেমন উন্নত হয়েছে, তেমনি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জর সম্মুখীন হচ্ছে। বায়ুদূষণে ঢাকা শহরের অবস্থান বিশ্বের প্রথম সারির দিকেই। আমাদের সবার প্রিয় ঢাকা শহরকে দূষণমুক্ত ও সুন্দর করে তোলার দায়িত্ব সবার।
নগর সবুজায়ন প্রকল্পের আওতায় শক্তি ফাউন্ডেশন এবং মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের যৌথ সহযোগিতায় এবং ডিএনসিসির তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে জাহাঙ্গীর গেট এবং বিজয় সরণির মোড় থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১৭০০০ শোভাবর্ধনশীল গাছ রোপণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম।
এমএমএ/জেডএইচ/এএসএম