মহাখালী টার্মিনাল
অবরোধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিলেই দুপুরের খাবার পাচ্ছেন শ্রমিকরা!
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা পঞ্চম ধাপের অবরোধেও রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল যাত্রীশূন্য। যাত্রী না থাকায় দূরপাল্লার বাস চলাচলও বন্ধ। ফলে অলস সময় কাটছে চালক, শ্রমিক ও কাউন্টার ম্যানেজারদের। মিলছে না মজুরিও। ফলে অনেক শ্রমিকই এক বেলা খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
অসহায় শ্রমিকদের জন্য দুপুরে বিশেষ খাবারের আয়োজন করেছে মহাখালী বাস টার্মিনাল মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। তবে এ খাবার পেতে শ্রমিকদের অংশ নিতে হয়েছে অবরোধবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে এবং মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টার্মিনাল ভবনের পেছনের অংশে পূর্বদিকে খাবার রান্না করতে দেখা যায়। সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রান্না করা খাবার সাতটি বড় ডেকে রাখা হয়েছে। খিচুড়ি, ডিম ভুনার সঙ্গে রয়েছে সবজি। দুপুর পৌনে ২টার দিকে খাবার দেওয়া শুরু হবে।
খাবার রান্না করছেন শ্রমিক ঐক্য পরিষদেরই কয়েকজন। তাদের মধ্যে একজন সেলিম মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধবিরোধী মিছিল। মিছিলে কার কাউন্টার থেকে কতজন অংশ নিলেন, সেই হিসাব রাখা হচ্ছে। সেই হিসাব অনুযায়ী খাবার দেওয়া হবে।’
মিছিলে অংশ না নিলে কি খাবার পাবে না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নেতারা কইছে মিছিল আইবো যারা, তাগো খাওয়ামু। যারা আইবো না, তাগো তো খাওয়ানো যাইবো না। ওরা সব বিএনপি-জামায়াত।’
আরও পড়ুন>> সকাল থেকে একজন যাত্রীও পাইনি, বাস ছাড়বো কেমনে?
শ্রমিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাসের ট্রিপ বন্ধ। আমাদের আয়ও তো বন্ধ। দুপুরে খাইতে গেলেও ১০০ টাকা লাগে। নেতারা খাবারের আয়োজন করায় দুপুরে খাওয়ার টাকাটা তো বাঁচবো। অবরোধে এমন আয়োজন করলে তো ভালোই হয়।’
এদিকে, দুপুর ১২টার দিকে বাস টার্মিনালের সামনে থেকে অবরোধবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন মহাখালী বাস টার্মিনাল মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু।
মিছিলটি নাবিস্কো ঘুরে আবার টার্মিনালের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে অবরোধবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন শ্রমিকরা।
মিছিল শেষে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা সাদিকুর রহমান হিরু জাগো নিউজকে বলেন, ‘এভাবে দিনের পর দিন অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ায় মালিক-শ্রমিকরা কষ্টে আছেন। শ্রমিকদের অনেকে এক বেলা খাচ্ছেন, কেউ না খেয়েই দিন পার করছেন। এজন্য মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের জন্য দুপুরের বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।’
অবরোধবিরোধী মিছিলে অংশ না নিলে খাবার দেওয়া হবে না- এমন তথ্য ঠিক নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই খাবার পাবেন। সব শ্রমিককে খাওয়াবো আমরা। আগেও একদিন আয়োজন হয়েছিল, সেদিন সবাই খেয়েছে। আজও সবাই মিলেমিশে খাবো।’
এএএইচ/ইএ/জেআইএম