মহাখালী বাস টার্মিনাল

সকাল থেকে একজন যাত্রীও পাইনি, বাস ছাড়বো কেমনে?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:২৯ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২৩

সকাল ৭টায় কাউন্টারে এসে বসেছি। এখন পর্যন্ত একজন যাত্রীও এসে জিজ্ঞেস করেননি, বাস ছাড়ছে কি না কিংবা ছাড়বে কি না। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে বেলা ১১টার মধ্যে ৮টি ট্রিপ মহাখালী থেকে ছেড়ে যায়, এখন ১টাও ছাড়া সম্ভব হয়নি। একজন যাত্রীও তো পাইনি, ছাড়বো কেমনে?

অবরোধে বাস চলাচল নিয়ে প্রশ্ন করায় এভাবেই যাত্রী না পাওয়ার কথা জানান রাজধানীর মহাখালীর এস আর পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আব্দুল খালেক।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এস আর পরিবহনের কাউন্টারে দেখা যায় নিশ্চুপ বসে আছেন কাউন্টার ম্যানেজার খালেক। বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধে যাত্রী না থাকায় মন খারাপ বলে জানালেন তিনি।

আব্দুল খালেক বলেন, মহাখালী থেকে বগুড়া, রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা রুটে দিনে ১৬টা বাস ছেড়ে যায়। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৮টা এবং বিকেল ৩টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আরও ৮টা বাস ছাড়ে। ৫০-৫৫ জন স্টাফ কাজ করে। এ মাসের শুরু থেকে একের পর এক অবরোধে যাত্রী নেই। স্টাফদের খোরপোশও দিতে পারছি না। অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। এভাবে তো চলতে পারে না।

আরও পড়ুন: সারাদেশে ১৮১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

পাশেই এনা পরিবহনের কাউন্টার। সেখানে দেখা গেলো স্টাফ-ম্যানেজার মিলে খোশ গল্পে মেতেছেন। কাউন্টার ম্যানেজার অর্জুন মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, যাত্রী আসলেই আমরা বাস ছাড়বো। যাত্রীই তো ভয়ে আসছে না। আগুন, হামলা, ভাঙচুরের ভয় পাচ্ছেন যাত্রীরা। মালিক-শ্রমিকদের ভয় নেই। গাড়ি আমরা নামাবোই। যাত্রীদের নির্ভয়ে আসা উচিত।

সকাল থেকে কয়টা বাস ছেড়েছে জানতে চাইলে এনা পরিবহনের এ কাউন্টার ম্যানেজার বলেন, সকাল থেকে ২-৩টা বাস ছেড়ে গেছে। সেগুলোতেও অনেক সিট খালি গেছে। যাত্রীর বড়ই অভাব।

অবরোধে বেশি বিপাকে পড়েছেন চালক ও শ্রমিকরা। কাউন্টার মাস্টার ও ম্যানেজারদের বেতন মাস হিসাবে হলেও চালক ও শ্রমিকরা মজুরি পান ট্রিপভিত্তিক। ফলে বাস না চললে তাদের মজুরিও দেওয়া হয় না।

এনা পরিবহনের স্টাফ ছাইদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আগে দিনে দুই ট্রিপ দিলে ৫৫০ টাকা পেতাম। এ মাসে ১৫ দিনে মাত্র ৪ দিন দুই ট্রিপ করে কাজ পেয়েছি। মানে দুই সপ্তাহে ইনকাম ২ হাজার টাকা। বলেন এ টকায় কী সংসার চলে?

অভি এন্টারপ্রাইজের স্টাফ আল মাহিম বলেন, খুব কষ্টে আছি। বাড়িতে মা বোন আর স্ত্রী আছে। আমি টাকা পাঠালে তাদের সংসার চলে। কিন্তু এ মাসে বেশিরভাগ দিনই টাকা পাঠাতে পারিনি। বাড়ি থেকে বারবার কল দেয় টাকার জন্য। গতকাল রাতে ওই মোবাইলটা বেচেই বাড়িতে ১২০০ টাকা পাঠিয়ে দিছি। বউকে বলেছি আগে কিস্তি পরিশোধ করো।

এএএইচ/এমআরএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।