তথ্যমন্ত্রী

সাংবাদিকদের ওপর হামলায় ব্যবস্থা নিতে মামলা করতে হবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০২৩

২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে হলে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমগুলোকে মামলা করতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, মামলাটা হতে হবে। যদি আইনগত ব্যবস্থা নিতে হয় সংশ্লিষ্ট হাউজগুলোকে মামলা করতে হবে। একই সঙ্গে সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের বিভিন্ন ফোরাম থেকেও বিবৃতি আসা দরকার।

বুধবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সম্পাদকদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জনের বেশি সাংবাদিক আহত হয়েছেন এবং দেশে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে সেই প্রেক্ষাপটে আপনাদের সঙ্গে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ৩০ জনের বেশি সাংবাদিক যে আহত হয়েছেন এবং তাদের ওপর হামলার ভয়াবহতা বা নির্মমতা কী রকম ছিল সেটি সার্বিকভাবে সারাদেশের জনগণ জানে না। এটা আমরা যারা সচেতন তারা জানি। এটা জানানোর দায়িত্ব আমি মনে করি আপনাদের এবং এটার ওপর প্রত্যেকটি পত্রিকায় রিপোর্টিং হওয়া দরকার।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাহলে এ নিয়ে মানুষ জানবে। এ কাজগুলো করা দরকার। তাহলে আমাদের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়াও সহজ হবে। আমরা ব্যবস্থা নিতে চাই, বদ্ধপরিকর। কিন্তু কোনো একটা বিষয় ব্যবস্থা নিতে হলে প্রথমত মামলা লাগবে।

তিনি বলেন, এটা খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে এবং এ ঘটনা দেশবাসীকে জানতে হবে। এ ন্যক্কারজনক ঘটনার বিপক্ষে পাবলিক অপিনিয়ন বিল্ডআপ করতে হবে। আপনারা সবকিছুর ব্যাপারে অপিনিয়ন বিল্ডআপ করেন। কিন্তু এ বিষয়টি পুরো পরিস্থিতির ক্যানভাসে হারিয়ে গেছে। সুতরাং এটিকে আরেকটু ভাইব্রেট করে নিয়ে আসতে হবে।

আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসা সহায়তার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কোনো হাউজ যদি চায় অবশ্যই আপনারা তালিকা দিলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের চিকিৎসা সহায়তা করতে পারি। কারণ আমাদের ট্রাস্ট ফান্ড আছে। ট্রাস্ট থেকে আমরা চিকিৎসার জন্যই সহায়তা করতে পারি। সুতরাং সেখান থেকে আমরা করতে পারবো।

২৮ তারিখ কার্যত রাষ্ট্রের ওপর হামলা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা, আমার জানামতে আর কখনোই এ ঘটনা ঘটেনি। এর আগে প্রধান বিচারপতির এজলাসের দরজায় বিএনপি আইনজীবীরা লাথি মেরেছেন। সর্বশেষ ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা হলো। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হাসপাতালে হামলা বাংলাদেশ আর কখনো হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

এগুলো রাষ্ট্রের ওপর হামলা এবং রাষ্ট্রের ওপর হামলাকারী চিহ্নিত- উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। এটিকে যদি নিছক রাজনীতি বলে সেভাবে এটাকে ট্রিট করি, তাহলে এটা ভুল হবে, ঐতিহাসিকভাবে ভুল হবে এবং এটির দায় আমরা এড়াতে পারবো না, আমরা সার্বিকভাবে দায় এড়াতে পারবো না।

সম্পাদকদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা কথায় কথায় বিবৃতি দেয় এবং কেউ একটু দৌড় দিলে বিবৃতি দেয়, তারা যে এখন নিশ্চুপ আছে সেজন্য আপনাদের বিবৃতি দিয়ে মনে করিয়ে দিতে হবে হোয়াই ইউ আর সাইলেন্ট। ইউ রাইট লেটার টু দেম। আপনাদের সম্মিলিতভাবে চিঠি লেখা দরকার, তোমরা এখন নিশ্চুপ কেন এবং সে চিঠি আবার গণমাধ্যমে প্রকাশ করা দরকার। আপনারা চিঠি লিখবেন এবং সেটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করবেন।

বাংলাদেশ বিষয়ে ফের বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনটি বিবৃতিতে জানায়, দেশে রাজনৈতিক বিক্ষোভকালে মৃত্যু, গ্রেফতার এবং দমন-পীড়ন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতি দিয়েছে গতকাল। কিন্তু সেই বিবৃতি একটা রাজনৈতিক বিবৃতি হয়ে গেছে। সাংবাদিকদের কথা নেই সেখানে, আমি পড়ে দেখেছি।

আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, শ্যামল দত্ত, বেলায়েত হোসেন, নাসিমা খান মন্টি, শাহেদ মুহাম্মদ আলী, মোস্তফা মামুন, এনামুল হক চৌধুরী, নাইমুল ইসলাম খান, রফিকুল ইসলাম রতন, ফারুক আহমেদ তালুকদার, সন্তোষ শর্মা, রিমন মাহফুজ, মাহবুবুর রহমান, মফিজুর রহমান খান বাবু, জোবায়ের আলম, মাইনুল আলম, মোতাহার হোসেনসহ অনেকে।

এমএএস/এমআইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।