খুললো আরেক স্বপ্নের দুয়ার, টানেলের যুগে বাংলাদেশ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুল প্রত্যাশিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আরেক ধাপ এগোলো বাংলাদেশ। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী এবং বন্দর নগরীর কোটি বাসিন্দার স্বপ্ন সত্য হলো। টানেলের যুগে প্রবেশ করলো উন্নয়নের মহাসড়েকের অভিযাত্রী বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম টানেল বাংলাদেশকে বিশ্বে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করেছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার পর পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ টানেল উদ্বোধন করেন। আগামীকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে টানেল।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু টানেল ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়
বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, টানেলটি চট্টগ্রাম নগরীকে চীনের সাংহাই নগরীর মতো ‘দুই শহরকে এক নগরীতে’ পরিণত করবে। পাশাপাশি এটি দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করবে। শিল্পায়নের অপার সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরীর পরিধিকে প্রসারিত করার মাধ্যমে সমগ্র অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন ঘটাবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যমতে, ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক অর্থায়ন করেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। টানেলের পুরো রুটের দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার (৫ দশমিক ৮৩ মাইল)। তবে মূল সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার (২ দশমিক শূন্য ৬ মাইল) ও ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার (৩৫ দশমিক ৪ ফুট)। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের নেটওয়ার্ক হবে আরও উন্নত। এটি নির্মাণ করেছে চীনের কোম্পানি চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।
আরও পড়ুন: অর্থনীতির গতি বাড়াবে বঙ্গবন্ধু টানেল
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলটির বোরিং ফেজও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
টানেলটি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে সড়ক পথের দূরত্ব কমিয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য অংশের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজ করেছে। এটি চট্টগ্রাম বন্দর ও আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে কর্ণফুলী নদীর ওপর দুই সেতুতে যানজটও কমে আসবে।
এর আগে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিদিন ১৭ হাজার ২৬০টি যানবাহন টানেলটি ব্যবহার করতে পারবে। বছরে যা হবে প্রায় ৭ দশমিক ৬ মিলিয়ন যানবাহন। টানেলটি দেশের বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ বাড়াতে সহায়তা করবে।
এসইউজে/কেএসআর/জেআইএম