দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

উন্নয়ন হলেও বিপন্ন মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২৩
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাংলাদেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, বিগত বছরে পিছিয়ে পড়া মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ভোগের ক্ষেত্রে অগ্রগামী হতে পারেনি। উন্নয়নে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিগত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা ও পরিসংখ্যানে এটা প্রকাশ্য সত্য যে, বাংলাদেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈষম্য শুধু সম্পদ কিংবা অর্থের নয়, ভোগেও বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই সমান ভোগ করতে পারেনি। তাই উন্নয়নের ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে।

বুধবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার লক্ষ্যে নাগরিক এজেন্ডা: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামাজিক সুরক্ষা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

আরও পড়ুন: আয়বৈষম্যের চেয়ে সম্পদের বৈষম্য বেড়ে দ্বিগুণ: সিপিডি

তিনি বলেন, পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের প্রাক নির্বাচনের সময় পরিস্থিতির কারণে উৎসাহবোধ করিনি। কিন্তু এবারে নির্বাচনের প্রাককালে গত দেড় দশকের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা আমরা মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছি। এটা করতে যেয়ে আমাদের মনে হয়েছে, জাতীয় উন্নয়নের যে আখ্যান বা বয়ান আমরা সর্বদা শুনি, সেটা কতখানি সত্য ও মজবুত বোঝা প্রয়োজন। বুঝতে গিয়ে বাংলাদেশের সাতটি জায়গায় বিপন্ন ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫০০ মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

সিপিডির বিশেষ ফেলো বলেন, বিগত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা ও পরিসংখ্যানে এটা প্রকাশ্য সত্য যে, বাংলাদেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈষম্য সম্পদ কিংবা অর্থের নয়, এখানে ভোগেও বৈষম্য বেড়েছে। পিছিয়ে পড়া মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ভোগের ক্ষেত্রে অগ্রগামী হতে পারেনি।

আরও পড়ুন: ভিসানীতির শর্ত দিয়ে ভালো নির্বাচন চাওয়া দুঃখজনক: সিপিডি

উন্নয়ন হলেও বিপন্ন মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারিনি

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা এগিয়েছি সন্দেহ নেই। কিন্তু যে মানুষগুলো বিপন্ন অবস্থায় আছে, তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারিনি। উন্নয়নের মধ্যে ন্যায্যতা আনতে হবে। পিছিয়ে পড়া মানুষের হিস্যাকে সামনে আনতে হবে। উন্নয়নের ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনাই হলো আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ। গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতাই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে জায়গা দেয়। সবচেয়ে বড় ক্রিয়াক্ষেত্র হলো নির্বাচন। নির্বাচনের অঙ্গীকার সামনে নিয়ে আসতে হবে। পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নকে বার বার উপস্থাপন করতে হবে।

মধ্যবিত্ত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজ দুর্বল হয়ে গেছে। ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মান ও রাজনৈতিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ওই ভূমিকা ম্রিয়মাণ হয়ে গেছে। ফলে পিছিয়ে গেছি আমরা।

আরও পড়ুন: দুর্ভিক্ষ আসছে এটা সত্য: সিপিডি

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মিজ শাহীন আনাম আলোচনায় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জলবায়ুকেন্দ্রিক তিনটি পৃথক উপস্থাপনা প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুণগত মান বৃদ্ধির ব্যক্তি পর্যায়ে চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এর উপদেষ্টা ডা. ইয়াসমিন এইচ. আহমেদ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট স্থানীয় ঝুঁকি মোকাবিলা নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ইশতিয়াক বারী। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ।

জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।