বিপিসি
কাজে লাগবে না, তবুও ‘জ্ঞান নিতে’ বিদেশ যাচ্ছেন কর্মকর্তারা
# সংশ্লিষ্ট নন কিংবা ভ্রমণে আহরিত জ্ঞান প্রকল্পে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা নেই এমন কর্মকর্তারা যাচ্ছেন সফরে
# স্ত্রী, ছেলে, নাতনিকে নিয়ে ব্যক্তিগত সফরে কানাডা যাচ্ছেন বিপিসি চেয়ারম্যান
দেশে ডলার সংকট পৌঁছেছে চরমে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণ ও কেনাকাটা নিরুৎসাহিত করে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। চলমান সংকটের কারণে জ্বালানি সরবরাহকারীদের বিলও নিয়মিত পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এরই মধ্যে বিপিসির চারটি প্রকল্পে বিদেশ সফরে যাচ্ছেন ২২ কর্মকর্তা। এসব সফরের তালিকায় এমন কর্মকর্তারাও আছেন, যারা ওই কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন কিংবা ভ্রমণে আহরিত জ্ঞান প্রকল্পে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা নেই। সংশ্লিষ্ট কারিগরি জ্ঞান নেই এমন কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরকে ‘প্রমোদ ভ্রমণ’ আখ্যা দিয়েছেন সমালোচকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বিভিন্ন প্রকল্পে চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর ও ইতালি সফরে যাচ্ছেন ২২ জন কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে ৯ জনের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কারিগরি জ্ঞান নেই। এ ৯ জনের তালিকায় রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, উপসচিব, জ্বালানি সচিবের একান্ত সচিব, বিপিসির দুই পরিচালক, সচিব এবং বিপিসি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী। এছাড়া স্ত্রী, ছেলে ও নাতনিকে নিয়ে ব্যক্তিগত সফরে কানাডা যাচ্ছেন বিপিসি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ।
কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বিষয়ে জানতে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদের দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত দুই মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। সংশ্লিষ্ট বিষয় উল্লেখ করে মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে খুদেবার্তা দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
এ ব্যাপারে বিপিসি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী মো. আহম্মদুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, স্যারের (বিপিসি চেয়ারম্যান) কানাডা সফরের এখনো শিডিউল নির্ধারণ করা হয়নি। নিজের ইতালি সফরের সূচিও ‘কনফার্ম হয়নি’ বলে জানান তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের ‘কতিপয় ব্যয় স্থগিত/হ্রাসকরণ ও বিদেশ ভ্রমণ সীমিতকরণ’-বিষয়ক এক ‘অতি জরুরি’ পরিপত্রে বলা হয়, ‘পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সকল প্রকার বৈদেশিক ভ্রমণ/ওয়ার্কশপ/সেমিনারে অংগ্রহণ বন্ধ থাকবে।’ তবে ‘সরবরাহকারী/ঠিকাদার/পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাগণ কর্তৃক সেবা/পণ্যের গুণগত মান নিরীক্ষা/পরিদর্শন’-এর ‘উদ্দেশ্যে সীমিত আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে।’
প্রয়োজন ছাড়াও কোনো কোনো সরকারি কর্মকর্তা সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করছেন। আবার একজনের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার দরকার, তিনি যেতে পারছেন না। আসলে সবাই সমান সুযোগ পাচ্ছেন না। যারা পাচ্ছেন, বিভিন্নভাবে সুযোগ বাগিয়ে নিচ্ছেন
এসপিএম প্রকল্পে চীন সফর
বিশ্বের অনেক দেশে গভীর সমুদ্রে রাখা জাহাজ থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল খালাস করা হয় সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের (এসপিএম) মাধ্যমে। সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশেও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এসপিএম প্রকল্প। আগামী নভেম্বর মাসে পুরোদমে অপারেশন চালুর কথা রয়েছে এ প্রকল্পের। বিপিসির নিজস্ব অর্থায়নে ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিপিসির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)। প্রকল্পটিতে ব্যয় হচ্ছে ৮ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা।
এসপিএম একটি ভাসমান মুরিং। এই ভাসমান মুরিং জাহাজের সঙ্গে আটকানোর জন্য ব্যবহার হয় ‘মুরিং হোসার’ নামে বিশেষভাবে তৈরি লোহার তার। এই মুরিং হোসার তৈরির কারখানা এবং বাস্তবে এসএমপি প্রকল্পের অপারেশন দেখার জন্য চীন সফরে যাচ্ছেন ইআরএল, বিপিসি এবং জ্বালানি বিভাগের ছয় কর্মকর্তা।
কর্মকর্তারা হলেন, বিপিসির পরিচালক ও সরকারের যুগ্ম সচিব অনুপম বড়ুয়া, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব লায়লাতুন ফেরদৌস, বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন) মুস্তফা কুদরত-ই-ইলাহী, প্রকল্প পরিচালক ও ইআরএলের মহাব্যবস্থাপক মো. শরীফ হাসনাত, বিপিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আপেল মামুন এবং ইআরএলের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মাহমুদুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয়জনের মধ্যে শেষের চারজন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট হলেও দুই যুগ্ম সচিব মোটেও সংশ্লিষ্ট নন। এসপিএম প্রকল্পটি বিপিসির অপারেশন ও পরিকল্পনা বিভাগ দেখভাল করছে। আর বিপিসির পরিচালক অনুপম বড়ুয়া হলেন বিপণন বিভাগের পরিচালক। একইভাবে মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন লায়লাতুন ফেরদৌস।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ দুই কর্মকর্তার এ সফরের অভিজ্ঞতা এসপিএম অপারেশনে কাজে আসবে না। তাছাড়া তারা যেকোনো সময় অন্য মন্ত্রণালয়েও বদলি হয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান জাগো নিউজকে বলেন, এসপিএম পরীক্ষামূলক অপারেশনের জন্য আমরা গত জুলাই মাসে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু মুরিং হোসার ছিঁড়ে যাওয়ায় তখন ক্রুড খালাস বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। ওই মুরিং হোসার চীনের একটি কারখানায় তৈরি হয়। মুরিং হোসার উৎপাদন এবং এসপিএম অপারেশন নিজ চক্ষে দেখতে ছয়জন কর্মকর্তা চীন সফরে যাচ্ছেন। সফর তালিকায় নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রণালয় ও বিপিসির প্রতিনিধি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ইস্টার্ন রিফাইনারির প্রকল্পে সিঙ্গাপুর সফর
একইভাবে ইস্টার্ন রিফাইনারির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন প্রকল্পে ফায়ার সিস্টেমের যন্ত্রপাতি কেনার কাজে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন ইআরএল, বিপিসি ও জ্বালানি বিভাগের পাঁচ কর্মকর্তা। তারা হলেন জ্বালানি বিভাগের উপ-সচিব বেগম খাদিজা তাহেরা ববি, ইস্টার্ন রিফাইনারির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ইন্সপেকশন অ্যান্ড সেফটি) এ কে এম নঈমুল্লাহ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাহ উদ্দিন খালেদ, ব্যবস্থাপক মুর্তাজা হাসান এবং বিপিসির উপ-ব্যবস্থাপন জয় শংকর ধর।
আরও পড়ুন: বিদেশ সফরে চট্টগ্রামের তিন শীর্ষ কর্তা!
খাদিজা তাহেরা ববি এবং জয় শংকর ধর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নন। ফায়ার সিস্টেমের যন্ত্রপাতি সম্পর্কে তাদের কারিগরি জ্ঞানও নেই। জয় শংকর ধর বিপিসির অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা। জ্বালানি বিভাগের উপ-সচিব বেগম খাদিজা তাহেরা ববি বিপিসির প্রকল্পে সরকারি খরচে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর সফর শেষে তিনি অন্যদের সঙ্গে দেশে ফিরবেন না। এরপর ব্যক্তিগত খরচে স্বামী এইচ এম আকতারুল আলম এবং কন্যা আকতিয়া খাদিজাতুল এশাকে নিয়ে মালয়েশিয়া যাবেন। এজন্য সিঙ্গাপুর সফরের বাইরে মালয়েশিয়া সফরের জন্য তার তিনদিনের ছুটি অনুমোদন করেছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।
তবে স্বামী-সন্তান সিঙ্গাপুর সফরে সঙ্গে থাকবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বেগম খাদিজা তাহেরা ববি শনিবার বিকেলে জাগো নিউজকে বলেন, সিঙ্গাপুর সফরের শিডিউল এখনো চূড়ান্ত হয়নি। মালয়েশিয়া সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া সফরে যাবো কি না, তাও এখনো কনফার্ম করা হয়নি।
পাইপলাইন প্রকল্পে জাপান সফর
দেশে জ্বালানি নিরাপত্তার অগ্রগতি সাধনে ৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম জ্বালানি পাইপলাইন প্রকল্প। দেশের অভ্যন্তরে তেল পরিবহনের জন্য এটিই প্রথম পাইপলাইন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিপিসির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (পিওসিএল)। এ প্রকল্পের ২৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ২৩২ কিলোমিটার পাইপলাইন এরই মধ্যে মাটির নিচে বসানো হয়েছে। এ প্রকল্পে প্রায় ৫০ কোটি টাকায় বড় চারটি প্রসেস পাম্প সরবরাহ করছে জাপানের প্রতিষ্ঠান শিন নিপ্পন মেশিনারি কোম্পানি লিমিটেড। আর পাম্প তৈরির ওই ফ্যাক্টরি দেখতে জাপান সফরে যাচ্ছেন পদ্মা অয়েল, বিপিসি এবং জ্বালানি বিভাগের পাঁচ কর্মকর্তা।
তারা হলেন- বিপিসির পরিচালক (অর্থ) ও সরকারের যুগ্ম সচিব কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের উপসচিব শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বিপিসির ঊর্ধ্বতন মহাব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ হোসেন ভুইয়া, পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুুদুর রহমান এবং প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ফারুক হোসেন মাহমুদ।
এ পাঁচ কর্মকর্তার মধ্যে মাসুদুর রহমান এবং ফারুক হোসেন মাহমুদ প্রকৌশলী। যুগ্ম সচিব কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক এবং উপসচিব বেলায়েত হোসেন প্রশাসন ক্যাডারের। এর মধ্যে কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক নিজ খরচে তার স্ত্রী সেলিনা আরা বেগমকেও জাপান সফরে নিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা অনুমতি পেয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও বিপিসির পরিচারক (অর্থ) কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক ফোন রিসিভ করেননি। পরে মোবাইলে খুদেবার্তা দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধের নির্দেশ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, প্রকল্পের সরকারি সফরের সবসময় টেকনিক্যাল লোকের সঙ্গে নন-টেকনিক্যাল লোকজনও থাকেন। এটি সচরাচর হয়। তবে ডলার সংকটের এ সময়ে কারিগরি জ্ঞানহীন কর্মকর্তাদের ফলশূন্য বিদেশ সফর সঠিক হচ্ছে না।
এলপিজি বটলিং দেখতে ইতালি সফর
বিপিসির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস লিমিটেডের (এলপিজিএল) বটলিং অটোমেশন প্রকল্পে ইতালি সফরে যাচ্ছেন এলজিপিএল, বিপিসি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ছয় কর্মকর্তা।
তারা হলেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. হাসানুজ্জামান, বিপিসির সচিব ও সরকারের উপ-সচিব মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, এলপিজিএলের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. ছিদ্দিক হোসেন, ব্যবস্থাপক তালুকদার ওয়ালীউল্লাহ, এ কে এম ফারুক ইকবাল এবং বিপিসি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী মো. আহম্মদুল্লাহ।
যাদের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কারিগরি জ্ঞান নেই, তাদেরও বিদেশ সফরে পাঠানো হচ্ছে। মূলত এসব প্রকল্পে সরকারি কর্মকর্তারা যান প্রমোদ ভ্রমণে। আবার অনেকে সরকারি প্রকল্পে বিদেশ সফরের কথা বলে স্ত্রী সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদেরও নিয়ে যাচ্ছেন।
এ সফর তালিকায় থাকা এলপিজিএলের তিন কর্মকর্তা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট, বাকিরা নন। সমালোচকরা বলছেন, প্রকল্পের নামে জ্বালানি বিভাগ ও বিপিসির কর্মকর্তাদের ‘রিফ্রেশার ট্যুর’ হিসেবে সফরে পাঠানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে এলপিজিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হানিফ জাগো নিউজকে বলেন, এলপিজিএলে সনাতন পদ্ধতিতে এলপিজি সিলিন্ডার রিফিল করা হয়। বটলিং অপারেশন স্বয়ংক্রিয় করার জন্য ১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ইতালির একটি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। এ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ছয়জন কর্মকর্তা ইতালি সফরে যাচ্ছেন।
সফর তালিকায় মন্ত্রণালয় ও বিপিসির কর্মকর্তাদের নাম থাকার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মচারীদের নানান সুবিধা, তবু অসন্তোষ
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর নিয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, দেশের সংকটকালে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর কাম্য নয়। পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের প্রকল্পে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব কিংবা উপসচিবের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের কোনো কারণ নেই। তারা যেকোনো সময় অন্য মন্ত্রণালয়ে বদলি হবেন। যাদের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কারিগরি জ্ঞান নেই, তাদেরও বিদেশ সফরে পাঠানো হচ্ছে। মূলত এসব প্রকল্পে সরকারি কর্মকর্তারা যান প্রমোদ ভ্রমণে। আবার অনেকে সরকারি প্রকল্পে বিদেশ সফরের কথা বলে স্ত্রী সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদেরও নিয়ে যাচ্ছেন। এতে বোঝা যায় তারা অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য নয়, যাচ্ছেন প্রমোদ ভ্রমণে। এতে সরকারি অর্থের নয়ছয় হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকার বিদেশ ভ্রমণ নিষেধ করেছে। কিন্তু প্রয়োজন ছাড়াও কোনো কোনো সরকারি কর্মকর্তা সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করছেন। আবার একজনের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার দরকার, তিনি যেতে পারছেন না। আসলে সবাই সমান সুযোগ পাচ্ছেন না। যারা পাচ্ছেন, বিভিন্নভাবে সুযোগ বাগিয়ে নিচ্ছেন।
ইকবাল হোসেন/এমএইচআর/জিকেএস