যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়া ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্নের অনুরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৬ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০২৩

ভিসা প্রক্রিয়া ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্নে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনা বিটারকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।

রোববার (১ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ সফররত রেনা বিটারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কনস্যুলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি।

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরে আনার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো কিছু নিয়ে আলোচনা হয়নি।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিকিউরিটি তো কনস্যুলারের মধ্যে পড়ে না।

আরও পড়ুন>> পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনা বিটার

নতুন ভিসানীতি প্রয়োগের পর যেহেতু এই বৈঠক, সে কারণে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ভিসানীতি নিয়ে আজ কোনো আলোচনা তারা তোলেনি। তবে আমাদের কিছু বিষয় ছিল যে, আমাদের ছাত্ররা ঠিকমতো ভিসা পান না। আমাদের যারা আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরি করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত, তারা ভিসা পান না। সেজন্য তাদের সমস্যা হয়, সে বিষয়টি আমরা তুলে ধরেছি। তারা বলেছেন, অবশ্যই কনসিডার করবেন। তারা তো ভিসাপ্রাপ্তির সময় অনেকটা কমিয়ে এনেছেন। আগে যেটা অনেক সময়সাপেক্ষ ছিল, সেটা এখন ছয় মাসে নামিয়ে আনতে পেরেছেন। এই ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তারা কি কোনো সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা রেগুলার ভিজিট হিসেবেই এসেছেন। তারা কোনো নির্দিষ্ট সমস্যা তুলে ধরেছেন বলে আমার মনে পড়ে না। তবে রোহিঙ্গাদের যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এ ইস্যুতে তো তাদের বিস্তারিত একটা কনসার্ন আছে। রোহিঙ্গারা যেন সম্মান এবং মর্যাদা নিয়ে দেশে ফেরত যায় যে ব্যাপারে আমাদেরও কোনো দ্বিমত নেই। আমরা মনে করি রোহিঙ্গারা যখনই যাক তারা সম্মান নিয়ে যেন নিজ দেশে ফিরতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যেটা হয়, এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি যেন না হয় যে তাদের জায়গা দিয়ে, অত্যাচার থেকে রক্ষা করে আমরা ভুল করে ফেলেছি এবং অন্যায় করেছি। এ ধরনের একটা পরিস্থিতিতে যাওয়াটা ঠিক হবে না।

‘রোহিঙ্গাদের পাইলট প্রকল্প নিয়ে তাদের কোনো কনসার্ন নেই। তবে আন্তর্জাতিকভাবে সবাই এটা বলে, তারা যেন মর্যাদার সঙ্গে ফেরত যায়। সেই জিনিসটাই হয়তো তারা বলতে চাচ্ছেন। আমরাও বলছি অবশ্যই আমরা একমত। তবে বাংলাদশে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে যেমন মাদক, নিরাপত্তা- এই সমস্যাগুলো যদি বিশ্বনেতারা মূল্যায়ন না করেন তাহলে এটা বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক।’ বলেন তিনি।

বাংলাদেশে ভিসানীতি প্রয়োগ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়া কি কমিয়ে এনেছে? এমন কোনো সংখ্যার কথা কি তারা জানিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা যে ভিসা দেয় সেটাতে এখন অনেক সময় লাগে। তাদের লক্ষ্য সেই সময়টা তারা ছয় মাসের মধ্যে আনার চেষ্টা করবে।

আরও পড়ুন>> সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনকারীদের ভয়ের কিছু নেই: পিটার হাস

অনেক সাধারণ মানুষ ভিসানীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, সেই বিষয়টি তাদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, এই উদ্বেগের কথা আমরা তাদের জানিয়েছি। তারা সেই উত্তরেই বলেছেন আমাদের কিছু সমস্যা ছিল, করোনার পরে সেই সমস্যাগুলো এখন তারা কাটিয়ে উঠেছেন এবং তারা চেষ্টা করবেন ছয় মাসের মধ্যেই সমাধান করার।

ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ তাদের জানানো হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, না, ভিসানীতি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ জানানোর কারণ নেই। যদি তারা সেটি করতে চায় করবে।

নতুন ভিসানীতি সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে কিছু জেনেছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, এটা তো তাদের ব্যাপার। আপনারা উৎসাহ দেখাতে পারেন এ ব্যাপারে, আমাদের তো কোনো উৎসাহ নেই।

‘আমেরিকা যেই সংখ্যক রোহিঙ্গা নিয়েছে, সামনে তারা আরও নিতে পারে, অন্য দেশেও নিতে পারে। তবে তারা এটা নিশ্চিত করেছে যে, তারা যে সাপোর্টটা দিচ্ছে শুরু থেকেই সেই সাপোর্টটা তারা কন্টিনিউ করবে। এর আগেও তারা সেটি করছে।’

আইএইচআর/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।