কলেজছাত্র হৃদয় হত্যা
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আরও দুই যুবক গ্রেফতার
চট্টগ্রামের রাউজানে কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয়কে অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উচিংথোয়াই মারমা এবং ক্যাসাই অং মারমা নামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আরও দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া নতুন ব্রিজ এবং হালিশহর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফ উল আলম।
তিনি বলেন, মূলত অপহৃত হৃদয়কে গলা কেটে হত্যা করেন উচিংথোয়াই মারমা। ক্যাসাই অং মারমা এ ঘটনার অন্যতম সহযোগী। বান্দরবানে ভিকটিমের বাবাকে ডেকে নিয়ে টাকা নেওয়ার ঘটনাতেও তারা জড়িত। ঘটনার পর থেকে তারা লাওয়ারিশ জীবনযাপন করছিলেন। কখনো টেকনাফ, কখনো বান্দরবান, আবার কখনো চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করছিল।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সারাক্ষণ নজরদারির মাধ্যমে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয় বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় এরআগে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে রাউজান থানাপুলিশ। তারমধ্যে একজন গণপিটুনিতে প্রাণ হারান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট রাতে কদলপুরের একটি মুরগির খামার থেকে হৃদয়কে অপহরণ করা হয়। পরে অপহরণকারীরা হৃদয়ের বাবার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। অপহরণকারীদের দাবি অনুযায়ী হৃদয়ের বাবা বান্দরবান এলাকায় ডুলাপাড়া এলাকায় গিয়ে দুই ব্যক্তির হাতে দুই লাখ টাকা তুলে দেন। মুক্তিপণ দেওয়ার পরও হৃদয়কে অপহরণকারীরা মুক্তি দেয়নি। ১৪ দিন পর অপহৃত হৃদয়ের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
হৃদয়ের মা নাহিদা আকতার বলেন, ‘অপহরণের পর আমার স্বামীর মোবাইলে ছেলে ফোন করেছিল। ছেলে বলেছিল, তাকে গাড়িতে করে কয়েকজন লোক নিয়ে যাচ্ছে। পরে ফোন দিয়ে তারা ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। তারপর তাদের বুঝিয়ে দুই লাখ টাকায় রাজি করানো হয়। তাদের কথামতো বান্দরবানে গিয়ে টাকা দিয়ে এলেও তারা আমার ছেলেকে ফেরত দেয়নি।’
অপহরণের ১৪ দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর ভোরের দিকে রাউজানের কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ নিয়ে ফেরার পথে পঞ্চপাড়া এলাকায় ঘটনায় জড়িত উমংচিং মারমা নামের এক অপহরণকারী গণপিটুনিতে নিহত হন।
নিহত হৃদয় রাউজান থানার কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শফিক ড্রাইভারের ছেলে। তিনি কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ালেখা করতেন।
ইকবাল হোসেন/এসআর