শুটকী নদী দখলমুক্ত করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৭ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

লুট ও দখলের গ্রাস থেকে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের শুটকী নদী দখলমুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশবাদী চার সংগঠন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন, নোঙর, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এবং ইনিশিয়েটিভ ফর দিস।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘দখলের গ্রাসে শুটকী নদীর ২৬ কিলোমিটার: ৫০ বছরের নদীলুট ঠেকাতে নাগরিক আহ্বান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান বক্তারা।

বক্তারা বলেন, শুটকী নদী বাংলাদেশের একমাত্র নদী, যেটি আদালতের রায় ব্যক্তি মালিকানাধীন হচ্ছে। নদীটি এখন এতিমের মতো পড়ে আছে। এর জন্য দায়ী হচ্ছে নদীরক্ষা কমিশন। কাগজে-কলমে তারা কোর্টে যেতে পারে, কিন্ত পলিসি তৈরি করতে পারে না, দখলদারদের নাম প্রকাশ করতে পারে না।

সভায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সাবেক প্রধান নির্বাহী শিফা হাফিজা বলেন, মৃত শুটকী নদী একটি জীবন্ত সত্তা। এ নদী রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। শুটকী নদীর এ অবস্থা গত ৫০ বছর থেকেই। ধীরে ধীরে এটা আজ মৃত প্রায়। বর্তমানে দেশের নদীগুলো দখলমুক্ত করতে আমাদের সুশাসনের অভাব রয়েছে। কারণ সুশাসন এখন মৃতপ্রায়। এর সঙ্গে জড়িত প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভূমি মন্ত্রণালয়, নদী রক্ষা কমিশন। সঙ্গে আছে আমাদের মৃতপ্রায় বিচারব্যবস্থা।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘নদী রক্ষার বিষয়ে জানে না, কিছু বোঝে না এমন মানুষকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। আইন আছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না। পার্লামেন্ট এমন কোনো আইন করেনি, যেটা নদীর স্বার্থের পরিপন্থি। কিন্তু আইনগুলোকে প্রয়োগ করা হচ্ছে না, কেন হচ্ছে না বিষয়টি দেখতে হবে। নদী সবার, নদী কোনো দলের নয়, ধর্মের নয়। আগামী প্রজন্মের জন্য পরিবেশকে ভালো রাখতে হবে। শুটকী নদীসহ সব নদী দখলমুক্ত করতে হবে। শুটকী নদীর উদ্ধারের জন্য নদীর কাছে যাবো। সেখানের প্রশাসন, পলিটিক্যাল অর্গানাইজেশনের সঙ্গে কথা বলবো। শক্ত আইনের পাশাপাশি মানুষকেও সচেতন হতে হবে।

শুটকী নদী দখলমুক্ত করার আহ্বান

প্রাণ প্রকৃতি-প্রতিবেশ-পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আমাদের নদীগুলোকে একেরপর এক খুন করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে মামলা করেও টেকা যায় না। এখানে আদালতের দুর্বলতা আর রাজনৈতিক ক্ষমতার একটা ব্যাপার আছে। উন্নয়ন করতে গিয়ে নদীকে বিলীন করে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার প্রশাসন প্রায় দখল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তু লাভ হচ্ছে না। আমাদের দখল উচ্ছেদের প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা দরকার। শুটকী নদীকে বাঁচাতে হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসতে হবে। সেখানে গিয়ে ডিসির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আর আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে নিয়ে আদালতে যাবো।

হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (জিইউবি) অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, নোঙর বাংলাদেশ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুমন শামস, আরডিআরডিসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশননের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা।

এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।