পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই কুয়েতের ফ্লাইটে শিশু, ১০ জনকে প্রত্যাহার
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক শিশুকে কেন্দ্র করে তোলপাড়। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে শিশুটি একাই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের (কেইউ-২৮৪) একটি ফ্লাইটে ওঠে। কিছু সময় উড়োজাহাজের ভেতর ঘুরে একটি আসনে বসে। তবে যে ব্যক্তি এই আসনের টিকিট কেটেছেন, দেখেন তার আসনে একটি শিশু বসে আছে।
শিশুকে তার বাবা-মার সঙ্গে নির্দিষ্ট আসনে বসার জন্য বলা হয়। কিন্তু শিশুটি কোনো কথা বলছিল না। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানান ওই যাত্রী। তখন এই শিশুর অভিভাবক কে, তা খোঁজা হয়। উড়োজাহাজের যাত্রীর সংখ্যাও গণনা করা হয়। এ সময় তারা জানতে পারেন এই শিশু পাসপোর্ট, ভিসা, বোর্ডিং পাস না নিয়ে একাই বিমানের ভেতর ঢুকে পড়েছে।
পরে শিশুটিকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) কাছে দেয় কুয়েত ওয়ারওয়েজ। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে।
জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এই শিশুটির নাম জোনায়েদ মোল্লা (১০)। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। ঘটনার পর তার গ্রামের বাড়ি খবর পাঠানো হয়েছিল। পরে গতকালই তার চাচা মো. ইউসুফ মোল্লা থানায় আসেন। তার জিম্মায় শিশুটিকে দেওয়া হয়েছে।
ওসি জানান, জোনায়েদ মোল্লার বাবার নাম ইমরান মোল্লা। পেশায় কৃষক। তার বাবা-মার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে। এখন কেউ শিশুটির খোঁজ-খবর রাখেন না। তাই চাচার জিম্মায়ই তাকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পাসপোর্ট, ভিসা, বোর্ডিং পাস ছাড়া একটি শিশু কীভাবে প্লেনে ওঠে এ ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, বিমানবন্দরে কর্মরত প্রত্যেক কর্মী ডিউটি পাস ব্যবহার করে চলাফেরা করেন। বাকি যারা যাত্রী তারা পাসপোর্ট এবং বোর্ডিং পাস দিয়ে চলাফেরা করেন। এছাড়া বিমানবন্দরে ঢুকে ইমিগ্রেশনসহ ৮-১০টি ধাপ পেরিয়ে প্লেনে উঠতে হয়। কিন্তু কোনো ধাপেই শিশুটিকে আটকানো হয়নি।
এমন ঘটনায় বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১০ জনকে প্রত্যাহার করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
এমএমএ/এমএস