বাচ্চাদের কান্নায় ভারী শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০৬ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাজধানীর ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি তিন মাসের শিশু আবদুল্লাহ। গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে জ্বর ও বমি উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় শিশুটি। শিশুর দেখভালে হাসপাতালেই দিন কাটছে বাবা-মায়ের।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় শিশু আবদুল্লাহর বাবা আরিফের। সেখানে দেখা যায়, বাবার কোলে ঘুমাচ্ছে আবদুল্লাহ। ডান হাতে স্যালাইনের ক্যানোলা লাগানো। দিনের প্রায় পুরোসময় ডিএস ও অ্যান্টিবায়োটিক স্যালাইন দিতে হয়।

আলাপকালে আরিফ বলেন, সুইয়ের ব্যথায় বাচ্চাটা সবসময় কান্নাকাটি করে। কোলে রাখতে হয়। বিছানায় শোয়ালেই জেগে ওঠে এবং কান্না করে।স্বামী-স্ত্রী মিলে পর্যায়ক্রমে ওকে কোলে রাখি।

তিনি বলেন, আমার বাসা রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায়। আমার স্ত্রী ও আরেক সন্তান জ্বরে আক্রান্ত। তবে, প্যারাসিটামল খাবার পর তারা সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু ২ থেকে ৩ দিন ধরে জ্বর ও বমি বন্ধ না হওয়া আবদুল্লাহকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।

Child.jpg

আরিফ বলেন, ভেবেছি এত ছোট বাচ্চার কী ডেঙ্গু হতে পারে? ডেঙ্গু নেই ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে। ওষুধ খাওয়ালাম, পরে দেখি বাচ্চা খালি বমি করছে। পরে শিশু হাসপাতালে পরীক্ষা করালে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। গত ৫ সেপ্টেম্বর ভর্তি করিয়েছি। খেলেই বমি করতো, আর জ্বর ১০২, ১০৩ ডিগ্রি। নাপা ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে, জ্বর কমানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়েছে। তারপরেও দেখি জ্বর কমে না। এরপর শিশু হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এখন অ্যান্টিবায়োটিক চলছে, স্যালাইন চলছে। গতকাল জ্বর ছিল না, আজকেও জ্বর আসেনি।

শুধু আরিফ নন, তার মতো আরও অনেক পরিবার এখন ডেঙ্গুতে বিপর্যস্ত। শিশুদের চিৎকার, আর্তনাদে ভারী হাসপাতালের পরিবেশ। বাচ্চাদের কান্না থামাতে কেউবা দেখাচ্ছেন মোবাইল ফোনে ভিডিও, কেউবা এক হাতে স্যালাইন অন্য হাতে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হাঁটছেন। কেউবা বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

Child.jpg

গত রোববার হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছে ১৩ মাস বয়সী মরিয়ম। চারদিন ধরে জ্বর ভুগছিল শিশুটি। তার পায়ে স্যালাইনের ক্যানোলা লাগানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমে শিশুটির ডান হাতে ক্যানোলা লাগানো হয়। কিন্তু নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করায় তা খুলে ফেলা হয়। এরপর পায়ে ক্যানোলা লাগিয়ে তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়।

মেয়েটির বাবা ইয়াকুব আলী বলেন, বাচ্চার জ্বর না কমায় প্রথমে স্থানীয় একটা হাসপাতালে দেখাই। সেখান থেকে পিজিতে যাই। রোববার পরীক্ষায় বাচ্চার ডেঙ্গু পজিটিভ আসে, সঙ্গে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় ওকে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করাই।

তিনি বলেন, স্যালাইনে বাচ্চার অনেক কষ্ট হচ্ছে, কান্নাকাটি করছে। বাসায় যাওয়ার জন্য আবদার করছে। বাচ্চার কষ্ট দেখে বুক ফেটে যায়, কিন্তু কিছু করার নেই।

এসএম/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।