রেলমন্ত্রীর আক্ষেপ

উন্নত দেশের তুলনায় কম ট্রেন চলে, সেটারও ব্যবস্থাপনা করতে পারছি না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন

ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে রেল অপরিহার্য। এ কারণে দেশের সব জেলায় রেলওয়ে যোগাযোগ সম্প্রসারিত করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

বিভিন্ন দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশে অনেক রেল চলাচল করে। আমাদের এখানে তার থেকে অনেক কম রেল চলে। তারপরও এটাই আমরা ভালো ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করতে পারছি না। চীনে একটা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকেই সারাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় কী হচ্ছে দেখতে পারছে। প্রতিদিন কোথায়, কীভাবে ট্রেন চলছে এবং আয়-ব্যয় কত, সব সেখান থেকে জানতে পারছে।’

আরও পড়ুন: যাত্রার দিন কাউন্টারে মিলবে ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকিট

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ রেলওয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির ১১তম জাতীয় সম্মেলন ও ১৫তম কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন রেলমন্ত্রী।

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমরা আমাদের রেলকে সব জেলার সঙ্গে সম্প্রসারিত করবো। আমাদের বন্দরগুলোতে সম্প্রসারিত করবো। আমাদের যেসব সিঙ্গেল লাইন আছে সেগুলো ধীরে ধীরে ডাবল লাইনে রূপান্তর করবো।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেল। কারণ, তখন রেলওয়ে ছিল প্রধান যোগাযোগমাধ্যম। সড়ক পথের যোগাযোগ তেমন ছিল না, নদীপথ ছিল। সেই রেল ব্যবস্থাকে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু ঠিক করতে পেরেছিলেন। কিন্তু পরে যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন তারা কি রেলের কোনো সম্প্রসারণ করেছেন? বরং যেই রেলটা আমরা পেয়েছিলাম সেটা ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়েছে।’

আরও পড়ুন: সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি

রেলমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরিয়ে ফেলেছিল। নতুন কোনো নিয়োগ ছিল না এবং এটাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে রেলের আলাদা মন্ত্রণালয় ও রেল বাজেট করা হয়। রেলকে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। সেখানে আমাদের দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ছিল রেল। রেলকে বেসরকারিকরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘অনেক চড়াই উতরাই পার করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একটি ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য রেল অত্যন্ত অপরিহার্য। বিদেশে আমরা যেখানেই যাই না কেন, যেই দেশ যত উন্নত সেই দেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা তত উন্নত। সবাই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগিয়ে নিয়ে কীভাবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখাসহ রেল যোগাযোগ আরও নিরাপদ ও সাশ্রয়ী করা যায় সেভাবে তাদের রেল ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।’

আরও পড়ুন: অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সহজ নিয়ম

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। আমাদের চলমান চারটি প্রকল্প এখন রয়েছে। আখাউড়া থেকে আগরতলা, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এবং খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত আমাদের রেলের প্রকল্প আগামী অক্টোবরেই চালু হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি দীপক কুমার ভৌমিক। বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান প্রমুখ।

আরএসএম/কেএসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।