ন্যায়বিচার দাবি পরিবারের
অস্ত্র মামলার পর পুলিশকে দিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয় শামীমকে
ভোলার শামীম বকসির পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। শামীম থাকেন ঢাকায়। মোটরসাইকেল রাইড শেয়ার করে সংসারের ভরণপোষণ করেন। মাস দুই আগে তার বিরুদ্ধে ভোলার লালমোহন থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়। ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা হয়। পুলিশি হেফাজতে তার ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন।
শামীমের বোন মোসাম্মৎ শাহীনা আক্তার এমন অভিযোগ তুলে তার ভাইকে প্রহসনমূলক মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে ঘটনার তদন্তসহ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে রাজনৈতিক অসৎ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশে এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছেন।
রোববার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খা হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন মোসাম্মৎ শাহীনা আক্তার। তাদের বাড়ি ভোলার লালমোহনের কালমা বালুচর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়।
শাহীনা আক্তার বলেন, আমার ভাই শামীম বকসি ঢাকায় মোটরসাইকেল রাইড শেয়ার করে সংসার চালাতেন। তাকে মিথ্যা অভিযোগে অস্ত্র মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
ঘটনার বিবরণে তিনি বলেন, গত ঈদুল আজহার সময় আমার ভাই গ্রামের বাড়িতে যান। বাড়ি আসার দুদিন পর গত ৩০ জুন বিকেলে স্থানীয় এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ভাতিজা নয়ন পঞ্চায়েত ফোন করে তাকে বাড়ির পাশের রাস্তায় ডেকে নেন। সেখানে যাওয়ার পর এমপির ভাই জাকির পঞ্চায়েত এবং ভাতিজা নয়ন পঞ্চায়েতসহ আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে বেধরক মারধর করে। পরে পুলিশ ডেকে ভাইয়ের হাতে বগিদা এবং চাকু ধরিয়ে দিয়ে তল্লাশি করে। পরে অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। থানায় নিয়ে তাকে পুলিশি হেফাজতে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়।
তিনি বলেন, আমার ভাই অসুস্থ হয়ে গেলে স্থানীয় লালমোহন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে আবার অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আমাদের সামনে একটা পিস্তল দিয়ে বলে- এটা নাকি আমাদের বাড়িতে পাওয়া গেছে। পরে তাকে আবারও থানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
শাহীনা আক্তার বলেন, গত ১ জুলাই শামীমকে আদালতে পাঠানোর জন্য ভোলা সদরে নেওয়া হচ্ছিল। পথে বাংলা বাজারে থানার ওসিসহ পুলিশের গাড়ি থামিয়ে ঘটনার মূলহোতার সঙ্গে আলোচনা করে ক্রসফায়ারের নির্দেশ দেওয়া হয়। শর্ত হিসেবে বলা হয়, আদালতে ‘শেখানো বক্তব্য’ না দিলে তাকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমরা পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুরো ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ঘায়েল করতেই আমার ভাইকে অস্ত্র মামলার আসামি করা হয়। অথচ তার নামে আজ পর্যন্ত কোনো থানায় একটি জিডিও নেই। আমরা এ ঘটনার নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত চাই।
এসময় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেন শাহীনা আক্তার। একই সঙ্গে যারা মিথ্যা মামলায় শামীমকে জড়িয়েছেন এবং আদালতে মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে প্রহসনমূলক মামলা থেকে তার ভাইকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আরএসএম/এমকেআর/এমএস