পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আমাদের অবস্থান উন্নত হচ্ছে বলেই মার্কিন বিফ্রিংয়ে প্রতিদিন আলোচনা
বাংলাদেশের অবস্থান অনেক উন্নত হচ্ছে বলেই এ দেশের প্রতি সবার আকর্ষণ বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘গত ছয় মাসে দুনিয়ার প্রায় ৬০ দেশে নির্বাচন হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে আমাদের নির্বাচন হওয়ার আগে আরও ২২ দেশে নির্বাচন হবে। আমার কাছে নাম আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়— মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিদিনের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। আর আমি যে শ’খানেক দেশের নির্বাচনের কথা বললাম, তাদের নিয়ে কোনো আলাপ নেই। এর একটি অর্থ হচ্ছে আমাদের অবস্থান অনেক উন্নত হচ্ছে। আমাদের দেশের প্রতি সবার আকর্ষণ বেড়েছে।
আরও পড়ুন>>> বিএনপি সবসময় গণতন্ত্রের পথকে ভয় পায়: ওবায়দুল কাদের
বুধবার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মানিক মিয়া হলে ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি’ শিরোনামের এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
এতে কি-নোট উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের নির্বাচন হবে অত্যন্ত স্বচ্ছ ও সুন্দর। আমার বিশ্বাস, বাঙালি জাতি অত্যন্ত পরিপক্ক, তারা আসল জায়গায়ই ভোট দেবে। তবে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জীবন সহজভাবে কীভাবে চালাতে হয় সে বিষয়। কারণ, বর্তমানে পৃথিবীতে এক অনিশ্চয়তা চলছে। প্রায়ই বলে থাকি, যেসব দেশে রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আছে, শান্তি আছে- সেসব দেশে অঙ্কের হিসাবে দেখলে তাদের উন্নয়ন সবচেয়ে বেশি।’
আরও পড়ুন>>> হিরো আলমের অভিযোগে অবাক রিজভী
এ সময়ে সিঙ্গাপুরের উদাহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, ‘ছোট্ট একটি দেশ, সেখানে ৬৫ বছর ধরে তারা স্থিতিশীল। আগে বাবা, এখন ছেলে দেশটি শাসন করছেন। একটা ব্যারেন ল্যান্ড (অনুর্বর ভূমি) ছিল। এমন ব্যারেন ল্যান্ড যে মালয়েশিয়া থেকে বের করে দিতে হয়েছে। দরিদ্র জায়গা। কিন্তু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে তারা এখন এশিয়ার নাম্বার ওয়ান।’
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘যেসব দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শান্তি-শৃঙ্খলা নেই, সেখানে ভরাডুবি হয়েছে। ইরাক একসময় মধ্যপ্রাচ্যের অগ্রসর দেশ ছিল। সিরিয়া অনেক ভালো ছিল। আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত দেশ ছিল লিবিয়া। তাদের কোনো দেনা ছিল না। সুখে-শান্তিতে ছিল। কিন্তু তারা এখন মারামারি-কাটাকাটি নিয়ে ব্যস্ত।’
আরও পড়ুন>>> ‘সম্মানজনক শাস্তি’ পেলেন ছাত্রদল সভাপতি, এরপর কে?
তিনি বলেন, ‘আমরা মারামারি না, শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। আর তা বজায় রাখতে পারলে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। আগামী নির্বাচনে আমাদের একটি বড় পরীক্ষা হবে। আমরা যদি শান্তি-স্থিতিশীলতা বজায় রেখে শেখ হাসিনা সরকারকে জয়যুক্ত করতে পারি, তাহলে ট্র্যাক রেকর্ড অনুসারে তার উন্নয়নের গতিধারা চালু থাকবে।’
‘অন্যথায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। তখন বাংলাদেশ সন্ত্রাসী দেশ, পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ ছিল অসভ্য দেশ, যেখানে নারী-পুরুষ ও সংখ্যালঘু কারও জীবনের নিশ্চয়তা ছিল না। আমরা সেই বাংলাদেশ দেখতে চাই না’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আইএইচআর/কেএসআর/এমএস