তিস্তা ইস্যু আশার সঞ্চার করেছে: সেহেলি সাবরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২৫ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০২৩

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে অর্থবহ সংলাপ শুরু করতে ভারত সরকারকে যে সুপারিশ করেছে তা আশাব্যঞ্জক এবং তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি শাখার মহাপরিচালক সেহেলি সাবরিন।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন>> ওমানে আটক নারী এমপিসহ ১৭ জন মুক্ত

তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি গত ২৫ জুলাই তাদের ২২তম প্রতিবেদন ভারত সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। সেখানে তারা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে অর্থবহ সংলাপ শুরু করতে ভারত সরকারকে সুপারিশ করেছে। বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমাদের দিল্লির মিশন থেকেও এ ব্যাপারে অবগত হয়েছি। বিষয়টি অবশ্যই আশাব্যঞ্জক এবং তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি বলেন, বিশেষ করে এ সংসদীয় কমিটিতে বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেসসহ ভারতের সব রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যরা আছেন। তাই এ ধরনের একটি সুপারিশ আমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। এ সুপারিশকে উদ্ধৃত করে বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগামী দিনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে বলে আশা করি।

আরও পড়ুন>> চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কাজ চলমান

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ও নুর চৌধুরীকে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরাসরি এবং ওই দেশগুলোতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাইকমিশনের মাধ্যমে নিয়মিত তাদের প্রত্যাবাসনে দাবি জানিয়ে আসছে। উচ্চপর্যায়ের সব দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে উত্থাপন করা হয়েছে। তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়- অপরাধী তার সাজা ভোগ থেকে রেহাই পেলে তা শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকেই বাধাগ্রস্ত করে না, বরং তা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি ও পরিবারের মানবাধিকারকে লঙ্ঘন করে।

সেহেলি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হারজিত এস সাজ্জানের সাক্ষাৎকালে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠককালে এবং বাংলাদেশে সফরকারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে খুনিদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। ওয়াশিংটনে এ বছর মে মাসে অনুষ্ঠিত নবম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্ব সংলাপেও আগের বছরগুলোর মতো পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের এ দাবি উত্থাপন করেন। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আত্মস্বীকৃত এ খুনিরা এসব দেশের আইনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অপরাধের শাস্তি এড়িয়ে চলছে। তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সুরাহা করার বিষয়ে দেশ দুটির পক্ষ থেকে কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।

‘যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা উভয় দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরই বিষয়টি তাদের বিচার বিভাগের এখতিয়ারাধীন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনগত প্রক্রিয়ার জটিলতা উল্লেখ করে বাংলাদেশের দাবির ব্যাপারে তাদের বিচার বিভাগ ওয়াকিবহাল রয়েছে মর্মে জানিয়ে চলেছে। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’

আইএইচআর/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।