কাউকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে গিলমোরের সঙ্গে কথা হয়নি: প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৩
ইমন গিলমোরের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম

অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। কারণ, নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, এটি তাদের বিষয়। তবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকারের কথা আমরা পুনর্ব্যক্ত করেছি।

আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনের প্রত্যাশা গিলমোরের

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইমন গিলমোর। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তারা সম্পূর্ণ অবগত। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল এখানে ১৫ দিন ছিল। তারা ৭৫টি রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও সুশীল সমাজের সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের কাছে সব তথ্য আছে। কাজেই বিচার করার উপযুক্ত পর্যায়ে রয়েছে ব্রাসেলস।

তিনি বলেন, ইমন গিলমোর এরই মধ্যে বলেছেন যে তাদের কমিটি প্রতিবেদন পেশ করেছে। ইইউ বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ ব্যারেল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা বাংলাদেশে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠাবেন কি না। আমরা পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাই। যে কেউ এখানে এসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইইউ

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, গিলমোর এবারই প্রথম ঢাকায় আসেননি। এর আগে ২০১৯ সালেও এসেছেন। এছাড়াও ব্রাসেলসে তার সঙ্গে কয়েকবার দেখা হয়েছে। দারিদ্র্য প্রশমন ও নারীর ক্ষমতায়ণসহ বৃহত্তর মানবাধিকার নিয়ে তিনি কাজ করেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে তিনি আমাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) নীতিতে বাংলাদেশের ব্যাপক অবদানের প্রশংসা করেছেন তিনি। এতে বাংলাদেশি পণ্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে শুল্কমুক্ত প্রবেশ করতে সক্ষম হচ্ছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটসহ সার্বিক মানবাধিকার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমরা কাজ করছি। তাদের একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে দিয়েছি।

শাহরিয়ার আলম জানান, তিনি (গিলমোর) রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনেও যাবেন। গত পঞ্চাশ বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের বলিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও শক্তিশালী হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।

এসময় নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গিলমোর বলেন, যখন আমরা নির্বাচনের দিকে তাকাবো, তখন আমরা কেবল ভোটের দিনেই কী ঘটছে, তা দেখবো না। আমরা নির্বাচনপূর্ব পরিবেশের প্রতিও নজর রাখবো। কে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পরিস্থিতি, রাজনৈতিক বিতর্ক, সংবাদমাধ্যমের পরিস্থিতি, প্রশাসনিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থাও খেয়াল রাখবো। তবে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে আমরা কোনো পূর্বানুমান করতে চাই না।

আরও পড়ুন: ঘেরাও করলে ঘেরাও হয়ে বসে থাকবো

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা জানতে চেয়েছি। আমি মনে করি, আমরা একটি নতুন ধাপে প্রবেশ করছি। এখন কীভাবে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দেবো। কারণ বাণিজ্য অগ্রাধিকার ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি হতে দীর্ঘদিন লেগেছে। আমরা এখন বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অধিকার, ব্যবসা ও মানবাধিকারের প্রতি নজর দিতে যাচ্ছি। কারণ, এখন ভোক্তারা অনেক বেশি সতর্ক। তাদের পণ্য কোথা থেকে এসেছে, সেখানে সাপ্লাই চেনে কী ঘটছে, তাও জানতে চাচ্ছেন। আর বিনিয়োগকারীরাও মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেক বেশি অবগত। আমি মনে করি, এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও বেশি কাজ করতে হবে।

আইএইচআর/কেএসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।