‘জলবায়ু পরিবর্তন রোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়’
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক ঋতু পরিবর্তন, অত্যাধিক বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং খরা সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলশ্রুতিতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা ও বিভিন্ন রোগ ও তার সাথে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
‘তৃণমূলের কণ্ঠস্বর: স্বাস্থ্যের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব’ শিরোনামের এক গবেষণার ফলাফলে এই বিষয়গুলো উঠে আসে। রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এবং এমিনেন্স আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন এমিনেন্সের সিইও ড. শামীম হায়দার তালুকদার। গবেষণায় উঠে আসে, বাংলাদেশ তার ভৌগলিক অবস্থানের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বড় ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এ ধরনের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যের সামাজিক এবং পরিবেশগত নির্ধারক প্রভাবিত হচ্ছে এবং জনগণের স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মানও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । ঢাকা, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, বরগুনা, সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ এবং কুড়িগ্রামে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ এর উপদেষ্টা ড. আইনুন নিশাত। আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ওয়ামেক এ রাজা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা।
ড. তালুকদার তার উপস্থাপনায় তুলে ধরেন, গবেষণা এলাকায় সবচেয়ে প্রচলিত স্বাস্থ্য সমস্যা হলো কলেরা, ডেঙ্গু, ভিসারাল লেশম্যানিয়াসিস, প্রজনননালীর সংক্রমণ, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে অত্যাধিক লবণাক্ততার সঙ্গে যুক্ত অসুস্থতা, যেমন স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিও-ভাস্কুলার রোগ ইত্যাদির আধিক্য বেশি।
প্রধান অতিথি ড. আইনুন নিশাত বলেন, স্বাস্থ্যের প্রভাবকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে মূল্যায়ন করতে হবে। এছাড়া ড. নিশাত ন্যাপ (ন্যাশনাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যান) বাস্তবায়নের বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি এ বিষয়ে কাজ করার জন্য আটটি প্রধান ক্ষেত্রও তুলে ধরেন। যেমন- প্রশমন, অভিযোজন, অর্থ, প্রযুক্তি স্থানান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি, গ্লোবাল টার্গেট, ক্ষতি ও লোকসান, ও স্বচ্ছতা প্রক্রিয়া।
গবেষণা থেকে বেশ কিছু সুপারিশ উঠে আসে। এরমধ্যে ইউনিয়ন সাব-সেন্টার এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী, প্রযুক্তিবিদ এবং বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর রোগ শনাক্তকরণ ও তাদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
এমএমএ/এমএইচআর/জিকেএস