অনৈতিক সম্পর্ক
বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করাই কাল হলো জেপি নেতা সালাম বাহাদুরের
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার কলেজ গেট এলাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে যাওয়া জাতীয় পার্টির (জেপি) কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম বাহাদুরের (৫২) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজধানী ঢাকা ও মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার গাজিন্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা দুজন সম্পর্কে মা-মেয়ে। তবে গ্রেফতারদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।
আরও পড়ুন: জেপি নেতা সালাম বাহাদুর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন
ছবিতে আবদুস সালাম বাহাদুর
তিনি বলেন, গত ১৫ জুলাই দিনগত রাত ১১টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। পরে জানা যায়, নিহত ব্যক্তির জেপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম বাহাদুর। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে নেমে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সিসি ক্যামেরা অকার্যকর পায় পুলিশ। পরে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং মোবাইল ট্র্যাকিং ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি আজিমুল হক বলেন, নিহত সালামের সঙ্গে গ্রেফতার মেয়েটির রাজধানীর ধানমন্ডির একটি সুপার শপে ৫-৬ বছর আগে পরিচয় হয়। চাকরি দেওয়ার কথা বলে পরিচয় থেকে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। আর এ সম্পর্কের বিভিন্ন মুহূর্ত গোপনে ধারণ করে রাখেন সালাম।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে স্বামীর সঙ্গে পরকীয়া
এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। সালামের এমন কাজে দিশেহারা মেয়েটি ঢাকা ছেড়ে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে নিজ বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু সালামের ব্ল্যাকমেইল চলতেই থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ জুলাই বিকেলে সালাম মেয়েটির বাড়িতে যায়। তিনি সেখানে যাওয়ার আগেই স্থানীয় কয়েকজনকে বিষয়টি জানায় মেয়েটির পরিবার। মেয়েটির বাড়িতে যাওয়ার পরই সালামের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় সালামের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য বারবার নির্যাতন করা হয়।
এতে সালাম গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনার পথে মারা যায়। মৃত্যুর বিষয়টি টের পেয়ে অন্যরা গাড়ি থেকে নেমে যায়। এরপর গ্রেফতার মেয়ের মা সালামের মরদেহ গাড়িতে করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে পালিয়ে যায়।
মরদেহ উদ্ধারের পর নিহত সালামের শরীরে বিভিন্ন ক্ষত ও আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় পুলিশ।
গ্রেফতার মা-মেয়ের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
টিটি/এমকেআর