হিরো আলমকে নিয়ে ইসি আলমগীর
ভোটকেন্দ্রে কিছু হয়নি, তবে ঘটনাটি দুঃখজনক
স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলা বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, ‘তিনি (হিরো আলম) অনেক সমর্থকসহ কেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে প্রায় ৭০ জনের মতো ইউটিউবার ছিলেন। তখন তাকে গেটে আটকে দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, আপনার এজেন্ট বা চার-পাঁচজন নিয়ে ঢুকতে পারবেন। বাকিদের কেন্দ্র থেকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ভোটকেন্দ্রে কোনো কিছু হয়নি। তিনি যখন রাস্তায় এসেছেন তখন ওনাকে কে বা কারা ধাওয়া দিয়েছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি সুষ্ঠু-তদন্তের। এরই মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন>> আরাফাত ৮৭৮০, হিরো আলম ২০৪৪ ভোট
ইসি আলমগীর বলেন, ১২৪টা কেন্দ্রে ভোট হয়েছে একটা কেন্দ্রের পরিস্থিতি দিয়ে তো বলা যায় না নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। বিষয়টা হলো আমরা সঠিক অবস্থা এখনো জানতে পারিনি। আমরা বিচ্ছিন্ন কিছু তথ্য জানতে পেরেছি। কিছু আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি, কিছু আমাদের সোর্সের মাধ্যমে জেনেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অশান্তির খবর পাইনি। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন শেষ হয়েছে। আমাদের ঢাকার বাইরে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে ইউনিয়ন এবং পৌরসভা সেখানেও সুষ্ঠু হয়েছে। সব জায়গায় শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।
আরও পড়ুন>> হিরো আলমের ওপর হামলায় ঘটনাস্থল থেকে দুজন আটক
বনানী বিদ্যানিকেতন, শাহজাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশকিছু কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগে আলমগীর বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। অনেকগুলো কেন্দ্রে আমার গিয়েছি, ম্যাডাম গেছেন কেউ আমাদের এমন অভিযোগ করেননি। এখন আপনার করছেন। কেন্দ্রে তো ইউটিউবার ঢুকতে পারে না। ঢুকতে পারে সাংবাদিক, যাদের নির্বাচন কমিশন কার্ড দিয়েছে। ১২৪টা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটা কেন্দ্রে তো এমন হতেই পারে, এর জন্য ভোট সুষ্ঠু হয়নি বলা যাবে না।
নির্বাচনের যে ভোট পড়েছে সে ব্যাপারে আপনারা সন্তুষ্ট কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা চাই সুষ্ঠু ভোট হোক। ভোটররা কেন যাননি তার অনেক কারণ থাকতে পারে, সেটা আমি জানি না। বলাও ঠিক হবে না।
আরও পড়ুন>> সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে: ইসি আলমগীর
ঢাকা-১৭ আসনে ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঠিক কত শতাংশ ভোট পড়েছে সেটা আমরা পাইনি। তবে খুবই কম ভোট পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ হতে পারে, সর্বোচ্চ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে। পৌরসভাগুলোয় সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে, সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ।
নতুন দুটি দলকে নিবন্ধনের বিষয়ে দুটি কথা বলা হচ্ছে একটি নির্বাচন কমিশন সরকারের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে, অন্যটি আপনারা যে দুটি দলকে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে- এ বিষয়ে আলমগীর বলেন, অভিযোগ করতেই পারে, নির্বাচন কমিশন কোনো গোয়েন্দা সংস্থার কথায় চলে না। কোনো গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে কাজও করে না। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন>> ভোটকেন্দ্রে হিরো আলমকে ধাওয়া
দুটি দলের নিবন্ধনের বিষয়ে যে বিতর্ক সে বিষয়ে তিনি বলেন, নিবন্ধন পেতে হলে কেন্দ্রে একটি অফিস থাকতে হবে, ২২টি জেলায় তাদের অফিস থাকতে হবে এবং ৬১ উপজেলায় তাদের অফিস থাকতে হবে। প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে, সেটার ওপর সেকেন্ড টাইম আরেকটা তদন্ত করা হয়েছে, দুটি কমিটির তদন্তে যেখানে মিলে গেছে, সেই হিসেবে এ দুটি পার্টি শর্তগুলো পূরণ করতে পেরেছে। তাই তাদের নিবন্ধ দেওয়া হয়েছে। বাকি যারা পারেনি তাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
নির্বাচন কমিশন সরকারের অঙ্গ সংগঠন এ প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, এটা একটা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। গণতান্ত্রিক দেশে যে কোনো মানুষ, যে কোনো অভিযোগ করতে পারে, সেই অধিকার তাদের আছে, সেটা কতটুকু সত্য সেটা বিচার করবে দেশের জনগণ।
এমওএস/এমএএইচ/এএসএম