ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন
গুলশানে চেকপোস্ট-প্রবেশ পথে পুলিশের তল্লাশি
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনকে ঘিরে গুলশান এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব এলাকার প্রত্যেকটি চেকপোস্ট ও প্রবেশপথে চলছে তল্লাশি। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে ও মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১৭ জুলাই) গুলশান এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে গুলশান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গুলশান-১ ও গুলশান-২ এলাকার প্রবেশপথ, কাকলি, বনানী, গুলশান-১, গুলশান-২, বাড্ডা লিঙ্ক রোড, নতুন বাজার ও কালাচাঁদপুর এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে অনেক যানবাহন ও বহিরাগতদের গুলশানে প্রবেশের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। তবে চেকপোস্টগুলোতে তাদেরকে আটকে দিচ্ছে পুলিশ।
গুলশান-১ চেকপোস্টে মোটরসাইকেল আটকে দেওয়ায় এক যাত্রী শরিফুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, আমার জরুরি একটা কাজ ছিল। গুলশানে কোনো বাস চলতেছে না তাই মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলাম। এখন পুলিশ ঢুকতে দিচ্ছে না।
গুলশান-২ ঢোকার মুখের চেকপোস্টে মহিউদ্দিন রানা জাগো নিউজকে বলেন, আজ এখানে নির্বাচন তা জানি। তবে মোটরসাইকেল চলাচল করতে দিবে না তা জানতাম না।
আরও পড়ুন> ঢাকা-১৭ আসনে ভোট: সিসি ক্যামেরায় চোখ ইসির
কর্তব্যরত গুলশান ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা সত্ত্বেও যারা আজ গুলশান এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ মামলা দেওয়া হচ্ছে। কাউকে কাউকে বুঝিয়ে ফেরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রাফিক বিভাগের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, গুলশান ট্রাফিক বিভাগের গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এ এস এম হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকা ১৭ আসনের উপনির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পরিপালনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে গুলশান ট্রাফিক বিভাগ। প্রতিটি চেকপোস্টে ক্রাইম ডিভিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে তল্লাশি চালাচ্ছে ট্রাফিক সদস্যরা। চিকিৎসাসেবার কাজে যেসব যানবাহন রয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন রয়েছে এসব যানবাহনকে গুলশানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
ইসির তথ্যানুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড নম্বর ১৫, ১৮, ১৯, ২০ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে ঢাকা-১৭ আসন গঠিত। উপনির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে এ সংসদীয় আসনে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এসব ওয়ার্ড এলাকায় ৭২ ঘণ্টার জন্য মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কমিশন। ১৬ জুলাই মধ্যরাত ১২টা থেকে ১৭ জুলাই মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ট্রাক, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার ও ইজিবাইক। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে কিছু গাড়ি চলাচল করতে পারবে।
ইসির তথ্যানুযায়ী, উপনির্বাচনের সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র পাহারায় ২১ জনের পুলিশ-আনসারের সমন্বয়ে ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে। তারা দায়িত্ব পালন করবে ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। তবে অঙ্গীভূত আনসার পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের ১৫টি, র্যাবের ৬টি টিম ও ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে ২৫ জন নির্বাহী ও ৫ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৬২৫ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০ জন। ১২৪টি কেন্দ্রের ৬০৫টি কক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে। এ উপনির্বাচন সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সরাসরি মনিটরিং করছে ইসি।
আরএসএম/এসএনআর/জেআইএম