ভান্ডারিয়া পৌর নির্বাচন

জেপির মেয়র প্রার্থীকে সতর্ক করলো ইসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৯ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২৩
ফাইল ছবি

আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনে জাতীয় পার্টি-জেপির মেয়র প্রার্থী মো. মহিবুল হোসেনকে (মাহিম) সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে তিনি ও জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু যাতে আচরণবিধি মেনে চলেন তার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ভবনে এ সংক্রান্ত শুনানি হয়। শুনানিতে অংশ নেন ওই প্রার্থী। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ওই প্রার্থী আচরণবিধি মেনে প্রচার চালাবেন মর্মে নির্বাচন কমিশনকে লিখিত দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: নির্বাচন দেশে তৎপরতা বিদেশে

এর আগে শুনানিতে মেয়র প্রার্থী মো. মহিবুল হোসেনের উদ্দেশে সিইসি বলেন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং অফিসারের তদন্ত প্রতিবেদনে যেহেতু আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এসেছে, তাই আগামীতে যাতে বিধিভঙ্গ না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখবেন।

সিইসির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জেপির প্রার্থী বলেন, আমার দ্বারা কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ হয়নি এবং আগামীতেও হবে না।

আগামী ১৭ জুলাই ভান্ডারিয়া পৌরসভায় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। ৮ জুলাই জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ঢাকা থেকে ভান্ডারিয়ায় যান। ওই সময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে গাড়ির বহর নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় গেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।

আরও পড়ুন: আবারও প্রমাণ হলো- আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়

ওই ঘটনায় জেপির মেয়র প্রার্থীকে শোকজ করে তা তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দেয় ইসি। পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৫ এর বিধি ১৩ এর বিধান ভঙ্গ হয়েছে উল্লেখ করে পিরোজপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার দুই কর্মদিবসের মধ্যে জেপি প্রার্থীকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।

১০ জুলাই শোকজের জবাবের পর রিটার্নিং অফিসার ওই মেয়র প্রার্থীকে সতর্ক করে আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেন।

কমিশনের শুনানিতে এ বিষয়টি উঠে আসে। শুনানির শুরুতেই ইসি সচিব বিভিন্ন পত্রিকার কাটিং এবং টিভির ভিডিও ফুটেজ তুলে ধরেন। পরবর্তীতে কমিশন প্রার্থীর কাছে ব্যাখ্যা চায়।

জবাবে মেয়র প্রার্থী বলেন, রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার পর যথাসময়ের মধ্যেই জবাব দাখিল করেছি। ওই জবাবে বলেছি যে, ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা নেই এবং সেই ঘটনাটি একজন সাবেক মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যের তার নিজের সংসদীয় এলাকায় ব্যক্তিগত সফরমাত্র। এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং আমি নিজে উপস্থিতও ছিলাম না।

আরও পড়ুন: আমাদেরও এক দফা, শেখ হাসিনা ছাড়া নির্বাচন নয়: কাদের

প্রার্থী আরও বলেন, জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রতিমাসেই একবার করে তার নির্বাচনী এলাকায় যান। গাবখান সেতু এলাকা থেকে তার বাসভবন পর্যন্ত বরাবরই নেতাকর্মীরা শোডাউন করে তাকে নিয়ে যান। তবে এবার নির্বাচন থাকায় উনি গাবখান থেকে রাজাপুর পর্যন্ত আসার পর তার গাড়ি থামিয়ে দেন। বহর থেকে নেতাকর্মীদের আলাদা হওয়ার নির্দেশ দেন। যে শোডাউনের কথা বলা হচ্ছে, সেটি নির্বাচনী এলাকায় নয়। এটি নির্বাচনী এলাকার বাইরে।

প্রার্থী বলেন, আমার কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ হয়নি। আগামীতেও করবো না। বরং প্রতিপক্ষ প্রার্থী প্রতিনিয়ত বিধিভঙ্গ করে চলেছেন। এ বিষয়ে আমরা একাধিক অভিযোগ দিয়েছি।

ব্যাখ্যার জবাবে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, আপনি নিজে উপস্থিত না থাকলেও আপনার পক্ষে কেউ মিছিল বা শোডাউন করলে তার দায় আপনার ওপরই বর্তায়। এমপি যেহেতু ভান্ডারিয়ার ভোটার, তাই উনাকে এলাকার বাইরে আমরা থাকতে বলতে পারি না। উনি যাতে কোনোভাবেই আচরণবিধি ভঙ্গ না করেন-সেই বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

ব্যাখ্যা শুনানির শেষে ইসির পক্ষ থেকে আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে লিখিত দেওয়ার জন্য বলা হয়। জেপি প্রার্থী আচরণবিধি মেনে চলবেন- বলে লিখিত বক্তব্য দেন।

এমওএস/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।