উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে হাত পাতি না: প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২৩
ঢাকা সেনানিবাসে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি: সংগৃহীত

‘উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ধার নিই, হাত পাতি না’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে যারা মনে করতেন আমরা শুধু হাত পেতে চলবো, এখন তারা আর সেটা মনে করেন না। এখন আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ধার নিই, হাত পাতি না। তার সুদসহ ফেরত দিই। আগে ভাবনাটা এমন ছিল যে আমরা ভিক্ষা নিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ৫৪৩ মার্কিন ডলার ছিল, সেটা বেড়ে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮.৭ শতাংশ এবং অতিদারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।

আরও পড়ুন: কখনোই ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না: প্রধানমন্ত্রী

বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে ধাবিত হচ্ছি। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের নিজেদের অর্থে বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সক্ষমতা ও মর্যাদা বেড়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের একটা বদনাম দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করবো। আজ আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি।

বাংলাদেশকে উন্নত করতে জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার সেই স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ২১ বছর পর সরকার গঠন করার সুযোগ পাই আমরা। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীসহ প্রতিটি বাহিনী, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যাতে উন্নত হয় তার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছিলাম। আমার লক্ষ্য ছিল, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। কারণ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কাজ করে, পুলিশ বাহিনী কাজ করে, তারা যেন অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমানতালে চলতে পারে, কোনোভাবেই যেন পিছিয়ে না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিই।

আরও পড়ুন: আমরা কখনো বাইরের হস্তক্ষেপের কাছে মাথা নত করবো না: প্রধানমন্ত্রী

তিনি আরও বলেন, সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রতিটি বাহিনী সাধারণ মানুষের পাশে আছে। শুধু দেশে নয়, শান্তিরক্ষা মিশনেও যারা কাজ করে তাদের মাঝে সবচেয়ে মানবিক গুণ হলো, যে দেশে তারা যায় তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষের সেবা দিয়ে থাকে। এজন্য প্রত্যেকের কাছে একটা মর্যাদা পায়। আমি খুব গর্ববোধ করি, কারণ যে দেশে আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী কাজ করে সে দেশের সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান যখন প্রশংসা করে তখন গর্ববোধ হয়। আমরা সম্মান পাচ্ছি এটাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিলাম। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় দেশ যেন অন্তত এক ধাপ এগিয়ে যায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। এজন্য আমি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাই। আজকের বাংলাদেশ আমাদের সেই রূপকল্প বাস্তবায়ন করে আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি, তখন কিন্তু বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: মানুষের ক্ষতি আল্লাহ সহ্য করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার প্রিয় মাতৃভূমির সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একটি পেশাদার, প্রশিক্ষিত ও শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি গড়ে তোলেন। তিনি কম্বাইন্ড আর্মস স্কুল এবং সেনাবাহিনীর প্রতিটি কোরের জন্য স্বতন্ত্র ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি আমরা। ১৯৯৮ সালে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ’ এবং ‘মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’, ১৯৯৯ সালে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং’ এবং ‘আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করি।

এসইউজে/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।