বৃষ্টিহীন দিনে আহসান মঞ্জিলে দর্শনার্থীর ভিড়
গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীসহ সারাদেশে বৃষ্টি। ঈদের আনন্দ উপভোগ করার যেন কোনো সুযোগই ছিল না এবারের ঈদে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি শেষে আজ রোববার (২ জুলাই) বৃষ্টি না থাকায় রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্র আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে ছিল সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী। গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ মুঘল আমলের এ স্থানটিতে বেশি দর্শনার্থী এসেছে।
রোববার (২ জুলাই) বিকেলে সরেজমিন আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে গিয়ে এমনটাই দেখা গেছে।
এবারের ঈদের আগের দিন থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় বৃষ্টি। ঈদের দিনসহ গত দুই দিন রাজধানীসহ সারাদেশে বৃষ্টি থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটা ঘরেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছে মানুষ। রাজধানীতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তেমন বৃষ্টি না থাকায় অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ দর্শনার্থীর বাড়ে রাজধানীর আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে।
ঈদ ছাড়াই প্রতিদিন জাদুঘরটিতে যেখানে দেড় থেকে দুই হাজার টিকিট বিক্রি হয় সেখানে ঈদের মধ্যেও শনিবার (১ জুলাই) মাত্র ৪০০ টিকিট বিক্রি হয়েছে। অথচ ঈদে প্রতিদিন বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টিকিট। দর্শনার্থীদের থাকে উপচেপড়া ভিড়।
আহসান মঞ্জিল জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করা হয়। আর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভেতরে অবস্থান করতে পারে দর্শনার্থীরা। ঈদের মধ্যে দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি চাপ থাকে আহসান মঞ্জিলে। তবে এবার ঈদের ছুটির মধ্যে বৃষ্টির কারণে দর্শনার্থীদের কোনো চাপ ছিল না মুঘল আমলের এ স্থাপনাটিতে। বৃষ্টির কারণে গতকাল শনিবারও মাত্র ৪০০ টিকিট বিক্রি হয়েছে। তবে আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোনো বৃষ্টি না থাকায় স্থানটিতে দর্শনার্থী এসেছে প্রায় ৩ হাজার।
রাজধানীর মালিবাগ থেকে আসা দর্শনার্থী শাহরিয়ার আলম জাগো নিউজকে বলেন, গত দুই দিন বৃষ্টির কারণে ছেলে মেয়েকে নিয়ে বাসা থেকে বের হতে পারিনি। আজ বৃষ্টি না থাকায় বাসে এসে সরাসরি সদরঘাটে নেমেছি। ছেলে মেয়েকে নিয়ে আহসান মঞ্জিলে ঘুরলাম। তারা ভালোই উপভোগ করেছে। দিন ভালো থাকলে চিড়িয়াখানায় যাওয়ার চিন্তা আছে।
জান্নাত মালিহা নামের এক স্কুল ছাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের মধ্যে এবার ঘুরতে পারিনি। বৃষ্টির কারণে দুই দিন বাসাতেই ছিলাম। আজ ঘুরতে বেরিয়েছি। আহসান মঞ্জিলে আগেও এসেছি, তবে ঈদের মধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে প্রায়ই ঘুরতে আসি।
এদিকে আহসান মঞ্জিল জাদুঘর বন্ধের সময় না জানাই অনেকেই শেষ সময়ে এসেছে। অনেকে প্রবেশ করে কেবল আধাঘণ্টা সময় পেয়েছে। আবার অনেকে প্রবেশও করতে পারেননি।
রাজধানীর কোনাবাড়ি থেকে আসা হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। শেষ সময়ে এসেছি। টিকিটটা কেটে বাইরে একটু সময় ঘুরতেই ৫টা বেজে যায়, আর তখনই বের হওয়ার জন্য বলা হয়। ৫টায় বন্ধ হয়ে যায় আগে জানলে দুপুরেই চলে আসতাম।
আজিমপুর থেকে আসা নয়ন খান বলেন, এসে দেখি লোকজন বের করে দিচ্ছে। এত আগে বন্ধ হয় জানতাম না। ঈদের মধ্যে সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হলে ভালো হতো।
আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের কিপার বিজয় কৃষ্ণ বণিক জাগো নিউজকে বলেন, গত দুই দিনের তুলনায় আজ দর্শনার্থীর ভিড় বেশি ছিল। তাই ১৫ মিনিট বাড়িয়ে বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত টিকিট দিয়েছি আমরা।
ঈদের মধ্যে টিকিট বিক্রির সময় বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের হাতে নেই। মন্ত্রণালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্ত্রণালয় যেই সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করি।
আরএসএম/এমআইএইচএস/জেআইএম