রাজশাহী-সিলেট সিটিতে ভোটগ্রহণ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১১ এএম, ২১ জুন ২০২৩

নগরপিতা বেছে নিতে আজ বুধবার (২১ জুন) ভোটযুদ্ধে নেমেছেন সিলেট ও রাজশাহী সিটির ভোটাররা। সিলেট ও রাজশাহী দুই সিটিতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ভোটারদের সুবিধার জন্য আজ এই দুই সিটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানায়, নির্বাচনী এলাকায় সীমিত আকারে যান চলাচল করবে। সিসিটিভির মাধ্যমে ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন থেকে দুই সিটির ভোট সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে ইসি।

ইসি জানায়, সিলেট সিটিতে ৩ হাজার ২০৪টি এবং রাজশাহীতে ২ হাজার ৫০০টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। এক হাজার ৭৪৭টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে সিলেট সিটি এবং এক হাজার ৪৬৩টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে রাজশাহী সিটির ভোট পর্যবেক্ষণ করছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান জানান, সব নির্বাচনই আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জের। সব নির্বাচন থেকে অভিজ্ঞতা নিচ্ছি, ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী বিধি-বিধান প্রতিপালন নিশ্চিত করতে আমাদের অবস্থান ছিল কঠোর। আগের মতো রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপেই আমরা সুতীক্ষ্ণ নজর রেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন ঢাকা থেকে পর্যবেক্ষণ করবো। নির্বাচন পূর্ব, ভোটের দিন ও নির্বাচনোত্তর অনিয়ম, গোলযোগ ও সহিংসতা যেন না ঘটে সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আচরণবিধি প্রতিপালনে স্থানীয়ভাবে বেশ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ খতিয়ে দেখে সিলেটে একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়েছে।

এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ব্যাপারে প্রশাসন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করেছি। নির্বাচনী প্রচারণায় অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলা করলে কোনো ধরনের ছাড় দেইনি।

একনজরে সিলেট সিটি নির্বাচন
সিলেট সিটিতে ১৯০টি ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ৩৬৭টি ভোটকক্ষে ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৩৬ জন। নারী ভোটার ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন এবং ছয়জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।

এই সিটিতে মেয়র পদে আটজন, ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৯৪ জন এবং ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাকের পার্টির মো. জরিহুল আলম, স্বতন্ত্র মো. আব্দুল হানিফ, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মো. শাহ জাহান মিয়া এবং মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোট ৪২টি মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোট ১৪টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি থানায় একটি করে মোট ছয়টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য একটি করে মোট ২২টি র্যাবের টিম ও পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য এক প্লাটুন করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বুধবার পর্যন্ত ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৪ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে থাকবেন।

একনজরে রাজশাহী সিটি নির্বাচন
রাজশাহী সিটিতে ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ১৫৩টি ভোটকক্ষে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে এক লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন পুরুষ ভোটার। নারী ভোটার এক লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন এবং ছয়জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। রাজশাহীর সব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ, থাকছে সিসি ক্যামেরা।

এই সিটিতে মেয়র পদে চারজন, ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১১১ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন, আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুরশিদ আলম এবং জাকের পার্টির মো. লতিফ আনোয়ার।

ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোট ৩০টি মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোট ১০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি থানায় একটি করে মোট ছয়টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য একটি করে মোট ১৬টি র্যাবের টিম ও পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য এক প্লাটুন করে মোট সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বুধবার পর্যন্ত ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১০ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে থাকবেন।

জেএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।