ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন: আরাফাতের বছরে আয় সোয়া কোটি টাকা
ঢাকা–১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের (মোহাম্মদ এ আরাফাত) বছরে আয় প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। তার ঋণ আছে ১৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিকদার আনিসুর রহমানের কাছে নগদ আছে তিন লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
হলফনামায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী উল্লেখ করেছেন- নগদ টাকা ও ব্যাংক জমা মিলিয়ে তার প্রায় ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আছে। তিনি বছরে আয় করেন প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ আয় আসে তার পেশা ও ব্যাংক সুদ থেকে (৯২ হাজার ৪৭৭ টাকা)। তার নামে ফৌজদারি কোনো মামলা নেই। আরাফাত ও তার স্ত্রীর স্বর্ণালংকার, পাথরনির্মিত অলংকার বা অন্য কোনো মূল্যবান অলংকার নেই। তার নিজ নামে নগদ ও ব্যাংকে জমা আছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬০৬ টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ৮৩ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৯ টাকা।
বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয়- এমন কোম্পানির শেয়ারে আরাফাতের বিনিয়োগ রয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৬১ হাজার ৬৫০ টাকা। এ ছাড়া ডাকঘর, সঞ্চয়ী সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে আরাফাতের বিনিয়োগ রয়েছে ৩০ লাখ টাকা। তার ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের গাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রী ও আসবাবের আর্থিক মূল্য হবে ৩ লাখ টাকা।
আরাফাত স্ট্র্যাটেজিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এসএফআইএল) থেকে নিজ নামে ১ কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৮৬ টাকা গৃহঋণ নিয়েছেন। তার স্ত্রীর নামে অপরিশোধিত শেয়ারের অর্থের পরিমাণ ৮ লাখ টাকা। আরাফাত তার হলফনামায় জানিয়েছেন, তার কৃষি ও অকৃষিজমি নেই। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ পাস।
জাতীয় পার্টির প্রার্থীর হাতে নগদ আছে মাত্র ৩ লাখ টাকা
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিকদার আনিসুর রহমানের নগদ আছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে আছে ৫০ হাজার টাকা। আনিসুর রহমানের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ৪৯৮ টাকা। তার স্ত্রীর নামে আছে ৭০ হাজার টাকা।
আনিসুর রহমানের কৃষি থেকে বছরে কোনো আয় নেই। তিনি বাড়ি ও দোকানভাড়া থেকে বছরে পান ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে তার বছরে আয় ১২ লাখ টাকা। শেয়ারবাজারে তার বিনিয়োগ নেই। তবে, অবসর ভাতা হিসেবে বছরে তিনি ১ লাখ ২০ হাজার ১৮৩ টাকা পান। তার স্ত্রীর কাছে থাকা সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান অলংকারের আর্থিক মূল্য আড়াই লাখ টাকা। আনিসুর রহমানের কাছে থাকা আসবাবপত্রের মূল্য চার লাখ এবং ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রীর দাম তিন লাখ টাকা।
কৃষিজমি না থাকলেও তার অকৃষিজমির আর্থিক মূল্য ৪১ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা। বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের আর্থিক মূল্য ২৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। ডেলটা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড বা ডিবিএইচ থেকে তিনি ১৭ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছেন। আনিসুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি। আদালতে তার নামে তিনটি মামলা চলমান।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে রওশন এরশাদপন্থি মো. মামুনূর রশিদ ও আলোচিত আশরাফুল হোসেন আলমসহ (হিরো আলম) আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান।
রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) মনোনয়ন বাছাই করে মো. মুনীর হোসাইন খান জানান, ১৫ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে বাছাইয়ে সাতজনের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। বাকি আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরপন্থি সিকদার আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, গণতন্ত্রী পার্টি মো. কামরুল ইসলাম (চেয়ারম্যান মনোনয়ন দিয়েছে), গণতন্ত্রী পার্টির অশোক কুমার ধর (মহাসচিব মনোনয়ন দিয়েছে), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আকতার হোসেন, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে- জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদপন্থি মো. মামুনূর রশিদ, মো. তারিকুল ইসলাম ভূঞাঁ ( স্বতন্ত্র), আবু আজম খান (স্বতন্ত্র), আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম), মুসাউর রহমান খান (স্বতন্ত্র), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মো. মজিবুর রহমান ও শেখ আসাদুজ্জামান জালাল।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা চাইলে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ জুন। ভোটগ্রহণ হবে ১৭ জুলাই।
এমওএস/এমএএইচ/জিকেএস