আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে হবে: প্রধানমন্ত্রী
গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, নির্বাচন হবে যথাসময়ে, জনগণ তাদের ভোট দেবে। ভোটের একমাত্র মালিক হিসেবে জনগণ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে। জনগণের ভোটে বিজয়ীরা সরকার গঠন করবে। এটা গণতান্ত্রিক ধারা এবং তা অব্যাহত থাকবে।
জেনেভায় হোটেল হিলটনে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সামাজিক ন্যায়বিচার ছাড়া স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এটা ভাল করেই জানে যে তাদের খারাপ কর্মকাণ্ডের জন্য জনগণের কোন ভোট পাবে না এবং সে কারণে তারা এখন নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে পিছু হটার বাহানা খুঁজছে। আসলে তারা (বিএনপি) চোরের ও ভোট কারচুপিকারীদের দল। ভোট ডাকাতি করা ছাড়া তাদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব না।
শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে তারা (বিএনপি) দেশের সম্পদ বিক্রি করার পূর্বশর্ত মেনে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। জনগণ তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। সে কারণেই বিএনপি জনগণের ভোট পায় না।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের জন্য বিএনপির বারবার হুমকি প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, সরকার এতটা দুর্বল নয়। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে হৈচৈ ছিল, তারা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে, আমরা এতোটা দুর্বল পর্যায়ে নেই যে তারা আমাদের পতন ঘটাবে। আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে, আমাদের শক্তি আমাদের জনগণ।
আরও পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়ার প্রশংসায় চীন
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন বিষয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি, কিন্তু বিএনপি এখনো তত্ত্ববাবধায়ক সরকারের দাবি করছে।
বিএনপি কি পাগল নাকি শিশু হয়ে গেল- এমন প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবার খালেদা জিয়া দাবি করেছিলেন, পাগল বা শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। চোর, স্বাধীনতাবিরোধী ও খুনিদের ক্ষমতায় এনে আমরা বাংলাদেশকে অন্যের কাছে মাথা নত হতে দেবো না।
বিএনপি এখন নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে, নোংরা কৌশল অবলম্বন করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা দিবালোকে মানুষ হত্যা করেছে, লুটপাট-দুর্নীতি করেছে, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়েছে, এটাই এখন মূল ইস্যু যে তারা দণ্ডিত ব্যক্তির নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে কি না।
আরও পড়ুন: শিগগির ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে পারে বাংলাদেশ
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা আমাদের আন্দোলনের ফসল। এ জন্য আমার দলের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছেন। আর আমি গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার সুফল তুলে ধরে তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ বদলেছে, আজ দেশ উন্নত হয়েছে, আজ বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে আছে।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ যে মর্যাদা পেয়েছে তা নিয়েই এগিয়ে যাবে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।
আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সিদ্ধান্তে বিদেশি রাষ্ট্রের সম্মান চায় বাংলাদেশ
দেশের যে কোনো সংকটে প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখে। তিনি প্রবাসীদের হুন্ডির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে বৈধ মাধ্যমে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে শেখ হাসিনা বিদেশে যেতে আগ্রহীদের দালালদের সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন এবং নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধ উপায়ে বিদেশে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঈদের পরেই এক দফার আন্দোলনে যেতে পারে বিএনপি
এমকেআর/এমএস