ঈদুল আজহা

ঢাকার দুই সিটিতে ১৫ পশুর হাটের ইজারা চূড়ান্ত

মুসা আহমেদ
মুসা আহমেদ মুসা আহমেদ
প্রকাশিত: ০৮:১৬ এএম, ১৬ জুন ২০২৩
কোরবানির পশুর হাট/ফাইল ফটো

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসবে এবার। এরই মধ্যে ১৫টি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এসব পশুর হাট ইজারায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের কয়েকগুণ বেশি দর পেয়েছে সংস্থা দুটি।

ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, এবার ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকায় আটটি এবং ডিএসসিসি এলাকায় নয়টি অস্থায়ী পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে ডিএনসিসি আটটি ও ডিএসসিসি সাতটি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেছে। বাকি দুটি হাটের ইজারা প্রক্রিয়াধীন। এর বাইরে ডিএনসিসির গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট ও ডিএসসিসির সারুলিয়া পশুর হাটে কোরবানির পশু বিক্রি হবে।

আরও পড়ুন>> দেশে কোরবানিযোগ্য পশু উদ্বৃত্ত আছে ২১ লাখ ৪১ হাজার

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৯ জুন ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হতে পারে। সিটি করপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী, ঈদের তিনদিন আগে কোরবানির হাট বসার কথা। তবে যেসব হাট ইজারা চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোতে এখনই বাঁশ পুঁতে শামিয়ানা টাঙানোসহ আনুষঙ্গিক কাজ ইজারাদার শুরু করেছেন বলে জানা যায়।

ডিএনসিসি
কোরবানির হাট ইজারা বা তত্ত্বাবধানের কাজটি করে ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ। এই বিভাগ সূত্র জানায়, গত ২ মে আটটি পশুর হাটের দরপত্র আহ্বান করেন ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম। গত ১৫ মে প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রি শেষ হয়। পরদিন ১৬ মে সকালে দরপত্র দাখিল ও বিকেলে দরপত্র খোলা হয়।

jagonews24

দরপত্র অনুযায়ী, ডিএনসিসির ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাটের সরকারি মূল্য চাওয়া হয়েছিল এক কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২৬৭ টাকা। এ হাটের সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেছে তিন কোটি ৭০ লাখ টাকা। উত্তরা দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন বউ বাজার এলাকার খালি জায়গায় হাটের সরকারি মূল্য ছিল এক কোটি ২০ লাখ টাকা। এ হাটের সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া গেছে ছয় কোটি টাকা।

আরও পড়ুন>> সন্ধ্যার মধ্যেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ

বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাব নগরের ব্লক-বি থেকে এইচ ব্লক পর্যন্ত খালি জায়গায় হাটের ইজারা দর চাওয়া হয় এক কোটি ৫১ লাখ ৬ হাজার ৬০ টাকা। এ হাটে সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেছে এক কোটি ৬১ লাখ টাকা। মিরপুর সেকশন-৬ এর ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গায় এক কোটি ৩৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬০ টাকায় হাট ইজারা চেয়েছিল ডিএনসিসি। এ হাটের সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া গেছে এক কোটি ৩৬ লাখ ১৬ হাজার ৭৮৬ টাকা।

মোহাম্মদপুর বছিলায় ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গায় হাট ইজারায় সরকারি মূল্য চাওয়া হয়েছিল ২৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এ হাটের ইজারা মূল্য পাওয়া গেছে দুই কোটি ২০ লাখ টাকা। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠে হাট ইজারায় ৬০ লাখ ৬৩ হাজার ২০০ টাকা চেয়েছিল ডিএনসিসি। এ হাট ইজারা হয়েছে ৬০ লাখ ৭০ হাজার টাকায়।

কাওলা শিয়ালডাঙ্গায় পশুর হাটের ইজারা মূল্য ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল ডিএনসিসি। এ হাটের সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া গেছে এক কোটি ৩৭ লাখ ৫০০ টাকা। এছাড়া ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া বেপারীপাড়ার রহমান নগর আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গায় কোরবানি পশুর হাট ইজারায় সরকারি মূল্য চাওয়া হয়েছিল ৫ লাখ ৩১ হাজার ৬০ টাকা। এ হাটে সর্বোচ্চ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে ডিএনসিসি।

আরও পড়ুন>> গরুর দাম বেশি, হাটে বেচাকেনা কম

ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, এবার প্রতিটি অস্থায়ী হাট ইজারার বিপরীতে পাঁচ থেকে সাতটি করে শিডিউল বিক্রি হয়েছে। ফলে প্রতিটি হাটের ইজারায় ব্যাপক প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ দর (১৭ কোটি ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৮৬ টাকা) পেয়েছে ডিএনসিসি। এর আগে কখনোই হাট ইজারা দিয়ে এত পরিমাণ রাজস্ব পায়নি ডিএনসিসি, যা ডিএনসিসির ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।

jagonews24

ডিএসসিসি
গত ২৭ ও ৩০ এপ্রিল আলাদা দুটি বিজ্ঞপ্তিতে সাতটি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারায় দরপত্র আহ্বান করে ডিএসসিসি। পরে গত ২৩ মে শিডিউল বক্স খোলা হয়। দরপত্র অনুযায়ী ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা হাট ইজারায় সরকারি মূল্যে দুই কোটি ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৬৯২ টাকা চাওয়া হয়। এ হাটের সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া যায় চার কোটি ৫১ লাখ ৫১ হাজার ৫৫১ টাকা। এক কোটি ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯২২ টাকায় পোস্তগোলা শশ্মানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গায় হাট ইজারা মূল্য চেয়েছিল ডিএসসিসি। সেখানে সংস্থাটি সর্বোচ্চ মূল্য পেয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন খালি জায়গায় হাট ইজারায় এক কোটি ৭২ লাখ ৯ হাজার ১০০ টাকা চাওয়া হয়েছিল। এ হাট ইজারায় সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া গেছে তিন কোটি ১ লাখ টাকা। লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা ও কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন খালি জায়গায় হাট ইজারায় দুই কোটি ৯৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ হাটে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি পাওয়া যায়নি। ফলে হাটটির ইজারা চূড়ান্ত হয়নি।

যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাট ইজারায় তিন কোটি ১৪ লাখ ৮২ হাজার ২৭৮ টাকা চেয়েছিল ডিএসসিসি। এ হাটের সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেছে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৮০ টাকা। ধোলাইখাল ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গায় হাট ইজারায় দুই কোটি ৪৮ লাখ ৫৯ হাজার ১২০ টাকা চাওয়া হয়। এ হাট চার কোটি ৫৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকায় ইজারা হয়েছে। লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গায় ৩৯ লাখ ৩২ হাজার ৬০০ টাকায় হাট ইজারায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ হাট ইজারায় সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেছে ৫৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আমুলিয়া মডেল টাউন সংলগ্ন খালি জায়গায় হাট ইজারায় সরকারি ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৯ লাখ ২৮ হাজার ২৫২ টাকা। এ হাটের সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেছে ৫০ লাখ টাকা।

এছাড়া সম্প্রতি উত্তর শাহজাহানপুরে খিলগাঁও রেলগেট বাজার এলাকার মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গায় হাটের দরপত্র আহ্বান করেছে ডিএসসিসি। এ হাটের ইজারা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ডিএসসিসির বাকি দুটি হাট শিগগির ইজারা চূড়ান্ত হবে বলে আশা করি। সবগুলো হাটে যাতে সুষ্ঠুভাবে পশু বেচাকেনা করা যায়, যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিএসসিসি।

এমএমএ/এএসএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।