ইমামদের সচেতনতার বার্তা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে: মেয়র আতিক
মসজিদ ও মাদরাসায় ইমামদের সচেতনতা বার্তা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
রোববার (৪ জুন) রাজধানীর মিরপুরে পিএসসি (পুলিশ স্টাফ কলেজ) কনভেনশন হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ডিএনসিসির এলাকার মসজিদের ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। সভায় ডিএনসিসি এলাকার এক হাজার ইমাম ও খতিব অংশ নেন।
উপস্থিত ইমামাদের উদ্দেশ্যে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমরা মসজিদে গিয়ে ওয়াক্তের নামাজের সময়, জুমার নামাজের সময় মনোযোগ দিয়ে আপনাদের বয়ান শুনি। আপনারাই পারেন মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে। আপনারাই পারেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। আপনারা মানুষকে জানাবেন বর্ষাকালে এডিস মশার প্রকোপ বেড়ে যায়। এডিস মশার কামড়ে জ্বর হয়, মৃত্যু হয়। জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। অতএব কোনোভাবে যেন পানি জমে না থাকে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘এডিস মশা যখম কামড় দেবে মশা কিন্তু চিনবে না কে মেয়র, কে কাউন্সিলর, কে ইমাম বা খতিব। এডিস মশা সবার জন্যই হুমকি। অতএব এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। একমাত্র সচেতনতাই পারে এ ডেঙ্গু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে। যদিও সিটি করপোরেশন থেকে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। কার্যকরি লার্ভিসাইডিং করছি, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছি। কিন্তু সবার সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ইমামরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি মসজিদ-মাদরাসায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে বয়ান করে আপনারা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবেন। ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে জনগণকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে আমরা ডিএনসিসির কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিএনসিসি ও স্কাউটকে যুক্ত করেছি। ডিএনসিসির বিভিন্ন অঞ্চল (৪০০×৪০০মিটার গ্রিডে ভাগ করে) এ সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আপনারা এ সচেতনতায় যুক্ত হলে ইনশাআল্লাহ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।’
এসময় ডিএনসিসি মেয়র গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড দেখিয়ে উপস্থিত ইমামদের সচেতন করেন।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে লাখো লাখো মসজিদের ইমাম ও মাদরাসার খতিব রয়েছেন। ইমাম ও খতিবরা মসজিদে মুসল্লিদের ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সচেতন করলে এ ভয়াবহ মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যেকোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির ও অন্যান্য সাধারণ মানুষের বক্তব্য থেকে ইমামদের বক্তব্য বেশি কার্যকর হবে। মসজিদে বিশেষ করে জুমার নামাজের সময় বয়ানে, খুতবায় মুসল্লিরা ইমামদের কথা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শোনেন।’
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমানের সঞ্চালনায় ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম প্রমুখ।
এমএমএ/এমএএইচ/