লোডশেডিং পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে গেছে, আমরা দুঃখিত: প্রতিমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৪ পিএম, ০৪ জুন ২০২৩

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা লক্ষ্য করছেন যে, লোডশেডিংয়ের জায়গাটা বেড়ে গেছে। আমরা বারবার বলে আসছি কয়লা ও তেল -এগুলোর যোগান দিতে আমাদের দীর্ঘ সময় লাগছে। এজন্য আমাদের লোডশেডিংয়ের জায়গাটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। এখন যে সমস্যাটা দেখা গেছে, এর আকারটা (লোডশেডিং) বেশ খানিকটা বড় হয়ে গেছে। পরিস্থিতি অনেকটা অসহনীয় হয়ে গেছে।

রোববার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা চেষ্টা করছি অচিরেই এ অবস্থা থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আমরা আশা করবো আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে বেরিয়ে আসার। কারণ আমাদের কয়লার জোগান দিতে হচ্ছে, তেলের জোগান দিতে হচ্ছে, গ্যাসের জোগান দিতে হচ্ছে। আবার শিল্পে গ্যাস দিতে হচ্ছে। সব পরিস্থিতি একসঙ্গে এসেছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে আমরা চেষ্টা করছি, এটা কত দ্রুত সমাধান করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, কত দ্রুত পায়রাতে কয়লা আনা যায়। ওখানে আমাদের পাওয়ার প্ল্যান্টটি অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। বড় পুকুরিয়াতেও আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে।’

‘আমাদের লিকুইড ফুয়েল নির্ভর যে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো ছিল, সেগুলোর প্রায় অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। সেজন্য আমাদের লোডশেডিংয়ের মাত্রাটা অনেক বেড়ে গেছে, বিশেষ করে ঢাকা শহরের আশপাশেসহ গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন জায়গাতে। আমরা সকাল থেকে এটা মনিটর করছি।’

আরও পড়ুন: দুই সপ্তাহের মধ্যে লোডশেডিং পরিস্থিতি উন্নতির আশা প্রতিমন্ত্রীর 

তিনি বলেন, ‘তাপপ্রবাহও বেড়ে গেছে। তাপমাত্রা কোথাও ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে গেছে। এজন্য আমাদের পিক আওয়ারে ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। আমাদের হাতে যে পাওয়ার প্ল্যান্ট মজুত ছিল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য প্রস্তুত রাখছিলাম, সেটাও আমরা জ্বালানির কারণে দিতে পারছি না।’

পরিস্থিতি উন্নতির জন্য এখন কেন চেষ্টা করা হচ্ছে, আগে কেন করা হয়নি- জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা দুই মাস আগে থেকে চেষ্টা করছিলাম। আমরা জানতাম যে এ রকম একটা পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। সেটার সমাধান নিয়ে আমরা চেষ্টা করছিলাম।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তবে আমাদের অনেক কিছু দেখতে হয়। আমাদের অর্থনৈতিক বিষয় আছে, সময় মতো এলসি খোলার বিষয়ে আছে, সময় মতো জ্বালানি পাওয়ার বিষয় আছে। সেই বিষয়গুলোকে আমাদের একসঙ্গে সমন্বয় করে নিতে হয়।

‘তবে আশার কথা হলো, সামাল দেওয়ার একটা ব্যবস্থা অন্তত হয়ে গেছে। সেজন্য আমাদের ১/২ সপ্তাহ সময় দিতে হবে। সে সময় পর্যন্ত সবাইকে কিছুটা কষ্ট ভোগ করতে হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি আমাদের আড়াই হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেড হচ্ছে, এটা থেকে বেরিয়ে আমরা ধীরে ধীরে তা কমিয়ে আনবো। মনে হচ্ছে সেটা আমরা করতে পারবো।’

এরমধ্যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে পেট্রোল পাম্পে অকটেন দিতে পারছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, পেট্রোলের তো অভাব নেই। আমরা যেটা আনার চেষ্টা করছি সেটা হেভি ফুয়েল, সেটা দিয়ে তো গাড়ি চলে না। আমরা প্রচুর পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার চেষ্টা করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সর্বোচ্চ পরিমাণ গ্যাস উৎপাদন করতে যাচ্ছি এর অধিকাংশই আমরা বিদ্যুৎ এবং ইন্ডাস্ট্রিতে দিচ্ছি। গরমের কারণে চাহিদা বেড়ে গেছে।

জনগণের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শঙ্কিত হবেন না, এখনো এটি (বিদুৎ পরিস্থিতি) আমাদের কন্ট্রোলে।

আরএমএম/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।