‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ কর্মসূচি
প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহে সচেতনতা বাড়লে পরিবেশ দূষণ কমবে: আতিক
প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করায় দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ প্রাণ-আরএফএলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এমন কর্মসূচির মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়বে। মানুষ যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলবে না। পরিবেশ দূষণও কমে আসবে।’
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্লাস্টিক পণ্য রিসাইক্লিং কাজে প্রাণ-আরএফএল অনেক আগে থেকেই যুক্ত। তারা এ কাজটি আরও জোরালোভাবে করতে পারেন। যেমন প্রতিটি দোকান বা শপের সামনে যদি খালি বোতল সংগ্রহে একটি করে পাত্র দেওয়া হয় এবং প্রতিটি বোতলের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বা উপহার দেওয়া হয়, তাহলে মানুষ প্লাস্টিক জমা দিতে আরও উৎসাহী হবে।
শুক্রবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর হাতিরঝিলে পরিবেশ সুরক্ষায় জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের ২৪ জেলার ৫৮ স্থানে পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছে দেশের শীর্ষ শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ নামে ক্যাম্পেইন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ক্যাম্পেইনে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কর্মীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্লাস্টিক সংগ্রহে জড়িত ১২ ব্যক্তিকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে যুগপৎভাবে হাতিরঝিলসহ ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কক্সবাজারসহ দেশের ২৪ জেলার ৫৮ স্থানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ সবসময় বদ্ধপরিকর। পরিবেশের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এ কারণেই আমরা ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ ক্যাম্পেইন হাতে নিয়েছি। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক নানা ধরনের আয়োজন থাকবে। এর অংশ হিসেবে আমরা দেশের ২৪ জেলার ৫৮ স্থানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আর এন পাল বলেন, প্লাস্টিকের কাঁচামাল পচনশীল না হওয়ায় এটি পরিবেশ দূষণের অন্যতম অনুষঙ্গ। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিং নিশ্চিত করতে পারলে পরিবেশকে এ দূষণের হাত থেকে অনেকাংশে রক্ষা করা সম্ভব। প্লাস্টিকের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিংয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অনেক বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা রিসাইক্লিং করা গেলে পরিবেশ দূষণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল ও টেল প্লাস্টিকসের নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান।
প্রাণ-আরএফএল ২০১২ সালে প্লাস্টিক পণ্য রিসাইক্লিং কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়। প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত প্রাণ-আরএফএল বিনিয়োগ করেছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা।
প্রতিবছর সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকসহ প্রায় ৩২ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করে বানাচ্ছে শতাধিক পণ্য, যা কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করলে আর্থিকমূল্য দাঁড়াতো ৪৫০ কোটি টাকার বেশি।
এমএমএ/এএএইচ/এএসএম