জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক

বাংলাদেশকে সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০২ এএম, ০১ জুন ২০২৩

মানুষকে দরিদ্রের মধ্যে রেখে একটি দেশ তার আপেক্ষিক সুফল বা উন্নয়ন ভোগ করতে পারে না বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক অলিভিয়ার ডি শ্যুটার।

তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উন্নীত হওয়ার পর অধিকারভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে।

রোববার (২৮ মে) রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অলিভিয়ার ডি শ্যুটার। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক এই বিশেষ প্রতিবেদক ১২ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।

অলিভিয়ার ডি শ্যুটার বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন মূলত তৈরি পোশাকশিল্পের মতো একটি রপ্তানি খাতের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে চালিত। যা শ্রমের ওপর নির্ভরশীল।

ডি শ্যুটার বাংলাদেশে সরকারকে ২০২৬ সালে এলডিসি মর্যাদা থেকে উন্নীতের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তৈরি পোশাকশিল্পের ওপর তার নির্ভরতা পুনর্বিবেচনা করার আহবান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যতো উন্নীতকরণের পথে এগুচ্ছে, ততো এটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের ট্যাক্স-প্রণোদনা প্রদান এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে।

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক আরও বলেন, ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, কর্মীদের শিক্ষিত করা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং সামাজিক সুরক্ষার উন্নতিতে সরকারকে আরও বেশি সময় এবং সম্পদ ব্যয় করা প্রয়োজন।

তিনি জানান, এ জাতীয় উদ্যোগ শুধু সুনামের চিন্তা করে এমন বিনিয়োগকারীদেরই আকৃষ্ট করবে না এটি বাংলাদেশে উন্নয়নের একটি নতুন রূপরেখা তৈরি করবে। যা বৈষম্যমূলক রপ্তানি সুযোগের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ চাহিদা দ্বারা চালিত হবে।

এসময় অলিভিয়ার ডি শ্যুটার বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, উক্ত আইনের অধীনে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং শিক্ষাবিদদের তাদের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার প্রয়োগের কারণে আটক করা হয়েছে।

ডি শ্যুটার বলেন, এই বিষয়গুলো শুধু বিনিয়োগকারীদেরই শঙ্কিত করবে না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে।

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক বলেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি অসম হয়েছে। আদিবাসী, দলিত, বেদে, হিজরা এবং ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘু যেমন- বিহারীদের সুযোগ বঞ্চিত করা হয়েছে।

ডি শ্যুটার বাংলাদেশ সরকারকে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও যৌক্তিক করার আহ্বান জানান।

বিশেষ এই প্রতিবেদক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট নতুন এবং উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি থেকে জনসংখ্যাকে রক্ষা করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি তৈরি করা উচিত।

তিনি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র ২০২২ সালে ৭ দশমিক ১ মিলিয়ন বাংলাদেশি নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং অন্যান্য বিপর্যয়ের কারণে বা জলের লবণাক্তকরণের কারণে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে ও তাদের জীবিকা হুমকির সম্মুখীন হয়।

এএএম/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।