সন্তানদের পড়াশোনায় আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ৩০ মে ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাদের সন্তানদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।

মুসলমানদের যথেষ্ঠ পরিমাণ সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে যথাযথভাবে এ সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি-আমরা এটা করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, যখনই আমি ওআইসি সদস্য দেশে যাই তাদের আমি এ অনুরোধই করি।

সরকার প্রধান বলেন, ইসলামের স্বর্ণযুগে বিশ্ব সভ্যতা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা ও ভূগোলসহ জ্ঞানের আরও অনেক শাখায় মুসলিম স্কলারদের ব্যাপক অবদান রয়েছে। যা আমাদের মুসলিমদের ঐতিহ্যের গৌরবময় ইতিহাস গড়েছে।

তিনি বলেন, সে যুগের মুসলিম স্কলাররা সংস্কৃতি, জ্ঞান অর্জন, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছিল।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, সেই অবস্থান থেকে বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর এ পিছিয়ে থাকার কারণগুলো আমাদের বিশ্লেষণ করা দরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অভাব এবং অন্যান্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি এ হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলোকে বিশেষ করে তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।

jagonews24

শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এটাই এ আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত উদাহরণ।

তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, মুসলিম জাতির এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোরালো প্রচেষ্টা প্রয়োজন-যাতে করে তারা এ ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারেন।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব দ্বারা উপস্থাপিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয়। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, ইন্টারনেট অফ থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও অন্যান্য খাতে।

ওআইসি’র মহাসচিব ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) চ্যান্সেলর হিসেন ব্রাহিম তাহার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইইউটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

এছাড়াও এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি ও বক্তব্য দেন।

সমাবর্তনে ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক, মাস্টার্স, পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
শিক্ষার্থীদের অসামান্য ফলাফলের জন্য দুই ধরনের স্বর্ণপদক আইইউটি স্বর্ণপদক এবং ওআইসি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইইউটির ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী তার অর্থায়নে আইইউটির নবনির্মিত নারী হলেরও উদ্বোধন করেন।

আইইউটি বাংলাদেশের একটি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-যা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এর অর্থায়নে পরিচালিত হয়।

আইইউটির মূল উদ্দেশ্য হলো ওআইসি’র সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবসম্পদ উন্নয়নে-বিশেষ করে প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রাখা।

আইইউটি ওআইসিভূক্ত সদস্য দেশগুলো থেকে সরাসরি অনুদান পায় এবং ছাত্রদের বিনামূল্যে শিক্ষাদান, বোর্ডিং, বাসস্থান ও চিকিৎসা প্রদান করে।

এমআইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।