ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ের অগ্রগতি কতটুকু
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালে। প্রকল্পটি দুই দেশের সরকার বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে জিটুজি ভিত্তিতে হয়। ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ও চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালে। কিন্তু পরে এর মেয়াদ আরও চার বছর বাড়ানো হয়। সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ে আরও ৬৫১ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে এসেও পুরোপুরিভাবে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রকল্পের কাজ দেওয়া হয় চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনকে (সিএমসি)। এই প্রকল্পের জন্য বাজেট ছিল ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। শর্ত ছিল মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৮৫ শতাংশের টাকা দেবে চীন সরকার এবং ১৫ ভাগ ফান্ড থাকবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এক্সিম ব্যাংক থেকে। এ অবস্থায় প্রকল্পের কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান সিএমসিকে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে।
আরও পড়ুন: কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বাড়লো ৬৫১ কোটি, সময় বাড়লো দুই বছর
ঋণচুক্তির জটিলতা কাটার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের মূল নকশা তৈরিতে যৌথভাবে দুই কোম্পানি নিয়োগ দেয়। এরমধ্যে নকশা রিভিউ এবং নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগে চুক্তি সই হয় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্পেনের টেকনিকা ওয়াই প্রয়োকটস ও দক্ষিণ কোরিয়ার ডিওএইচডব্লিউএ এবং বাংলাদেশের ডিডিসির মধ্যে। চুক্তি শুরু হওয়ার পাঁচ মাস পরও এখনো অধিকাংশ নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারেনি সিএমসি।
তবে প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন খান জাগো নিউজকে জানান যে, প্রকল্পের কাজ চলমান। তিনি বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তরসহ নানা জটিলতা ছিল। সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে এখন প্রকল্পের কাজ চলমান। বর্তমানে খুব ভালোভাবে কাজ চলছে। আপনারা নিজে প্রকল্প এলাকা ভিজিট করে দেখতে পারেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-আশুলিয়া উড়ালসড়ক নির্মাণে চীনা কোম্পানি
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এভাবে বিলম্বের ফলে প্রকল্পের খরচ বাড়বে। এরমধ্যে আবার প্রকল্পের জন্য সিএমসিকে নিয়োগ করা হলেও তারা আরও তিন চীনা সাব-কন্ট্রাক্টর নিয়োগ দেয়।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় মূলত যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, সফলভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সহজ সংযোগ স্থাপিত হবে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও হবে যানজটমুক্ত। পাশাপাশি সাভার, আশুলিয়া, নবীনগর ও ইপিজেড সংলগ্ন শিল্প এলাকার যানজট কমবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, এক্সপ্রেসওয়েটি হবে সাভার ইপিজেড থেকে আশুলিয়া-বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ র্যাম্প থাকবে। এছাড়া ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনাও থাকবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। নির্মাণ পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য প্রকল্পটির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট করপোরেশন।
এমওএস/জেডএইচ/এএসএম