নির্বাচনে বাধা দিলে বিরোধীরাও ভিসা পাবে না: ডোনাল্ড লু
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি অনুযায়ী নির্বাচনে বাধা বা বিশৃঙ্খলা করলে বিরোধীদলের ক্ষেত্রেও সমভাবে ভিসায় বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
বুধবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ১টায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের ‘তৃতীয় মাত্রা’ অনুষ্ঠানে সরাসরি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ বিশেষভাবে কাউকে নিষেধাজ্ঞা দেইনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা প্রদানকারীদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ থাকবে। এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।’
আরও পড়ুন>> বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বাধা দিলে ভিসায় বিধিনিষেধ
ডোনাল্ড লু বলেন, ‘এ নীতি সরকার এবং বিরোধীদল সমভাবে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আমরা যদি দেখি বিরোধীদলের কোনো সদস্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা প্রদান করে বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারাও আমেরিকার ভিসা প্রাপ্তিতে বিধিনিষেধের আওতায় পড়বে। একইভাবে সরকারপন্থি কোনো সদস্য বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এ ধরনের ঘটনা ঘটালে তাদের আমরা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের অনুমতি দেবো না।’
পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, নতুন ভিসা নীতিতে এ বিষয়ে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে। যারা পরিবারের সদস্য যেমন স্বামী-স্ত্রী, সন্তান তাদেরও ভিসা প্রদান করা হবে না। আমরা এতটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি নতুন ভিসা নীতি আমরা বিরোধীদল ও সরকার উভয়ের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে অনুসরণ করবো। যুক্তরাষ্ট্র সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট দল বা নির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করে না। আমরা শুধু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে।’
আরও পড়ুন>> যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে সরকার চিন্তিত নয়
কীভাবে বাধা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে যারা বাধা সৃষ্টি করবে এবং যারা নির্দেশনা প্রদান করবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে পারবে না। আমরা আশা করি, এ ভিসা নীতি ভোটে সংঘাত কমাবে এবং সামনের বছর জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’
বাংলাদেশের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, ‘আমার বাংলাদেশে কয়েকবার ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে। দেশটি আমাদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে দারুণ সব মানুষ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোম্পানি রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি।’
এর আগে বুধবার রাতে বাংলাদেশের জন্য আলাদাভাবে ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বলা হয়, এ নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত। যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
আইএইচআর/ইএ