চট্টগ্রামেও হবে হাম-রুবেলা নির্ণয়কেন্দ্র, ল্যাব পরিদর্শন
দেশে কেবল রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের (আইপিএইচ) ল্যাবরেটরিতে হাম-রুবেলা রোগ নির্ণয় হয়ে থাকে। ঢাকার বাইরে আর কোথাও এ রোগ নির্ণয়কেন্দ্র নেই। তাই এ রোগের লক্ষণযুক্ত বা সন্দেহজনক রোগী পাওয়া গেলে তার রোগ নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা ঢাকার ল্যাবেই পাঠানো হয়। এখন রাজধানী ঢাকার বাইরে আঞ্চলিক পর্যায়ে চট্টগ্রামেও সংক্রামক রোগ হাম-রুবেলা নির্ণয়কেন্দ্র করার পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।
দেশের দ্বিতীয় ল্যাব হিসেবে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসিয়াস ডিজিসেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে এ রোগ নির্ণয় করার সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই চলছে। ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিআইটিআইডি ল্যাব পরিদর্শন করেছেন।
ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ হাম-রুবেলা। আক্রান্ত রোগীর হাঁচি, কাশির মাধ্যমে এ রোগ অতিদ্রুত ছড়ায়। যে কোনো বয়সে হাম হতে পারে। তবে শিশুদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ বেশি। বিশেষ করে পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের মাঝে এ রোগের জটিলতা ও মৃত্যুঝুঁকি বেশি দেখা যায়।
জটিলতাগুলোর মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অপুষ্টিতে ভোগা, এনকেফালাইটিস, অন্ধত্ব ও বধিরতা অন্যতম। হাম–রুবেলায় আক্রান্তের পর কোনো শিশু নিউমোনিয়া বা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তার মৃত্যুঝুঁকি বেশি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাম–রুবেলা নির্মূলে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে সরকার। তবে প্রকোপ কমলেও দেশ থেকে এখন পর্যন্ত এ রোগ নির্মূল করা যায়নি।
আরও পড়ুন> চট্টগ্রামে হাম-রুবেলার টিকা পাবে সাড়ে ১৯ লাখ শিশু
বিআইটিআইডির ফৌজদারহাটের ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, হাম–রুবেলার প্রকোপ থেকে রক্ষায় শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জন্মের ৯ মাসে শিশুকে এ টিকা দেওয়া হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে ৯ মাস বয়সের আগেও শিশু হাম–রুবেলায় আক্রান্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই শিশুর মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই লক্ষণ দেখা দিলে এ রোগ শনাক্ত করা জরুরি। এতদিন ঢাকার বাইরে এ হাম–রুবেলা পরীক্ষার সুবিধা ছিল না। লক্ষণযুক্ত বা সন্দেহজনক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে তা ঢাকায় পাঠানো হতো।
ডা. শাকিল বলেন, হাম–রুবেলা রোগ নির্ণয়ের সক্ষমতা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি টিম আমাদের (বিআইটিআইডি) ল্যাব পরিদর্শন করেছেন। তারা ল্যাব ঘুরে দেখেছেন। আমাদের ল্যাবের মান ও সক্ষমতা দেখে তারা বেশ সন্তুষ্ট। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল থেকে বিদেশি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আরও একটি টিম ল্যাব পরিদর্শনে আসবেন। তারাও সক্ষমতা যাচাই করবেন। তাদের পরিদর্শনের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
এমডিআইএইচ/এসএনআর/এমএস