কর্মশালায় বক্তারা

নিম্নমানের সিগারেটের দাম বাড়িয়ে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৩ পিএম, ১০ মে ২০২৩

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে সব ধরনের তামাকপণ্য বিশেষ করে কমদামি সিগারেটের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি দ্রুত চূড়ান্ত করতে হবে।

বুধবার (১০ মে) সাংবাদিকদের নিয়ে ‘তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ: বাজেট ২০২৩-২৪’ শীর্ষক কর্মশালায় আলোচকরা এ কথা বলেন। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের অডিটরিয়ামে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

তামাকবিরোধী গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) যৌথভাবে কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৬ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য কেবিনেট ডিভিশনে (মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ) পাঠানো হয়েছে। এটি চূড়ান্ত করতে যত দেরি হবে, তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি ততই বাড়বে।

কর্মশালায় জানানো হয়, আইএমএফের ঋণের বিপরীতে যে অতিরিক্ত কর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তার উল্লেখযোগ্য অংশ তামাকপণ্যের কর ও দাম কার্যকরভাবে বাড়িয়ে পূরণ করা সম্ভব।

jagonews24

বর্তমানে সিগারেট ব্যবহারকারীদের প্রায় ৭৫ শতাংশই কমদামি সিগারেটের ভোক্তা। এ স্তরে সম্পূরক শুল্কহার খুবই কম, মাত্র ৫৭ শতাংশ। নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা দাম ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৩৫ টাকা ৭৫ পয়সা অর্থাৎ ৬৫ শতাংশ সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়।

মধ্যমস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ টাকা ৫০ পয়সা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্কারোপ, উচ্চস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা দাম ১১১ টাকা থেকে ১২০ টাকা নির্ধারণ করে ৭৮ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করতে হবে।

প্রিমিয়ামস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা দাম ১৪২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্কারোপের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে বিড়ি, গুল ও জর্দার দাম বাড়িয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠির ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় কর্মশালায়।

কর্মশালায় জানানো হয়, তামাকবিরোধীদের এ বাজেট প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে এবং চার লাখ ৮৮ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং চার লাখ ৯২ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

কর্মশালায় মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর, সিটিএফকে বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স আত্মার কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের প্রমুখ।

এএএম/এএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।