বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘বিশ্ব রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট’ দিবস পালন
বর্ণাঢ্য আয়োজনে সারাদেশে ‘বিশ্ব রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট দিবস’ পালন করেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। শান্তিপূর্ণ ও মানবিক পৃথিবী প্রতিষ্ঠায় বিশ্বব্যাপী রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের মূলনীতি ও স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘আমরা সকল কাজই আন্তরিকভাবে করি’।
সোমবার (৮ মে) সকালে রাজধানীতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদরদপ্তরে জাতীয় পতাকা, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পতাকা, রেডক্রস রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূর-উর রহমান। এসময় সোসাইটির বোর্ড সদস্য আরমা দত্ত এমপি, রাজিয়া সুলতানা লুনা, মোহাম্মদ আতিকুল হক শামীম, আইএফআরসির হেড অব ডেলিগেশন সঞ্জীব কুমার কাফলে, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকসহ সোসাইটির সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও যুব স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় মো. নূর-উর রহমান বলেন, এবারের প্রতিপাদ্য আমাদের বিশ্বব্যাপী এ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মীদের অবদানের কথা, বিশ্বের বিপদাপন্ন ও অসহায় মানুষের জন্য তাদের ত্যাগ ও ভালোবাসার কথা মনে করিয়ে দেয়।
পতাকা উত্তোলন শেষে সোসাইটির মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবকরা বিশ্বের ১৯২টিরও বেশি দেশে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের উৎসাহিত করতেই এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘আমরা সকল কাজই আন্তরিকভাবে করি’।
পরে রেড ক্রিসেন্ট যুব নীতিমালার মোড়ক উন্মোচন ও বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড ডিজাস্টার রিপোর্ট ২০২২ প্রকাশ করা হয়। ৮ মে থেকে ৮ জুন সোসাইটির তহবিল সংগ্রহ মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে আর্তমানবতার সেবায় দেশের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের রেড ক্রিসেন্টের পাশে থাকার আহ্বান জানানো হয়।
বিশেষ এ দিবস উপলক্ষে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সোসাইটির জাতীয় সদরদপ্তর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সোসাইটির যুব স্বেচ্ছাসেবক ও সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এতে অংশ নেন।
বিশ্ব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের রোগীদের মাঝে ফুল বিতরণ করা হয়। জাতীয় সদরদপ্তরের পাশাপাশি সারাদেশে রেড ক্রিসেন্টের ৬৮টি ইউনিট তাদের নিজ নিজ আয়োজনে দিবসটি উদযাপন করছে।
১৮২৮ সালের ৮ মে রেড ক্রসের প্রতিষ্ঠাতা হেনরি ডুনান্ট সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মহান এ ব্যক্তিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে প্রতি বছর তার জন্মদিনটিকে বিশ্ব রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট দিবস হিসেবে সারাবিশ্বে উদযাপন করা হয়। সে ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয় দিবসটি।
এরপর ১৯৭৩ সালের ৩১ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি আদেশ (পিও-২৬) জারি করেন। এ আদেশের বলে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর ১৯৭৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তেহরানে রেড ক্রসের ২২তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ণ স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৮৮ সালে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।
এএএম/ইএ/এএসএম