বিউটি লাচ্ছি থেকে শেরাটন হোটেলের মুখরোচক খাবার, সব মিলবে এক উৎসবে
রাজধানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্কে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী মুজিব’স বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ মে) বিকেল থেকে বনানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্কে শুরু হচ্ছে এ ফুড ফেস্টিভ্যাল। এতে ৪৩টি স্টলে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান দেশের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার এবং হাজার বছরের বর্ণিল সংস্কৃতি উপস্থাপন করবে।
বুধবার (৩ মে) বিকেলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফেস্টিভ্যালের ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী জানান, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এমন এক উৎসব হবে, যেখানে একই স্থানে হাল আমলের চেইন হোটেলের মুখোরোচক বাঙ্গালি খাবারের পাশাপাশি অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী খাবারসমূহ পাওয়া যাবে। যেখানে মিলবে প্রায় ৫০ এর অধিক ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার। মূলত অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী খাবার থাকবে এ উৎসবে। দেশের মানুষ এসব খাবারের নাম জানে, এবার বিদেশিদের আকৃষ্ট করাই লক্ষ্য এ উৎসবের।
তিনি বলেন, উৎসবে থাকবে খুলনার বিখ্যাত চুই ঝালের মাংস, চট্টগ্রামের মেজবান, ঢাকার বিখ্যাত হাজীর বিরিয়ানি, বিউটির লাচ্ছি, বাকরখানি, নান্নার বিরিয়ানি, বিসমিল্লাহর চাপ, মোস্তাকিমের চাপ, বোবার বিরিয়ানি, বরিশালের গুটিয়ার সন্দেশ, বগুড়ার দই, কুমিল্লার মাতৃভান্ডারের রসমালাই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, বাগেরহাটের চিংড়ি ও সুন্দরবনের মধু, যশোরের জামতলার সাদেক গোল্লা, মৌলভীবাজার মনিপুরী খাবার, কক্সবাজারের সী ফুড, খাগড়াছড়ির বিখ্যাত ব্যাম্বো চিকেন, বান্দরবানের মারমা ফুড, উত্তরবঙ্গের প্যালকা, পিরোজপুরের সন্ধ্যা নদীর ইলিশ, সিলেটের পানসী রেস্টুরেন্টের আখনী বিরিয়ানি, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মন্ডা, শেরপুরের তুলসিমালা চালের পায়েশ, হরেক রকমের জুস, ফুসকা, আগুনপান।
এছাড়া বাংলাদেশের বিখ্যাত চেইন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, শেরাটন ঢাকা, হোটেল ওয়েস্টিন এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন তাদের বিখ্যাত বাংলাদেশি খাবার এ আয়োজনে উপস্থাপন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪ থেকে ৬ মে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। এ আয়োজনে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি দূতাবাস, মিশন ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনৈতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মূলত বনানী মাঠে বিকেল ৫টায় এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। শেষ দিন ৬ মে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি আমাদের অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত গম্ভীরা ও কুষ্টিয়ার লালন শিল্পীদের নিয়ে বাউল গান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
দ্বিতীয় দিন বিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতীর উপস্থাপনা রয়েছে। তৃতীয় দিনে চট্টগ্রামের বিখ্যাত কাওয়ালি গানের আয়োজন রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন পুঁথিপাঠের আসর বসানো হবে। খাদ্য সংস্কৃতির পাশাপাশি আমাদের এসব ঐতিহ্যবাহী গান, পুঁথিপাঠকে প্রচারের জন্য টেস্ট অব বাংলাদেশ আয়োজন করা হয়েছে।
এ আয়োজনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড পৃষ্ঠাপোষকতা করছে আইএফআইসি ব্যাংক, হেল্থ পার্টনার ইউনাইটেড হসপিটাল, আইসক্রিম পার্টনার পোলার আইসক্রিম, এনার্জি পার্টনার বেক্সিমকো এলপিজি, টেকনোলজি পার্টনার বন্ডস্টাইন, কালচারাল পার্টনার কালচারাল ক্লাসিসিস্টস এবং পরিকল্পনা ও পরিচালনায় স্পেলবাউন্ড লিও বার্নেট।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, বাংলাদেশ পুলিশ গুলশান বিভাগ, ডেসকো, ফায়ার সার্ভিস এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ এ উৎসব আয়োজন ও পরিচালনায় সহায়তা প্রদান করছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (পর্যটন) মনোজ কুমার রায়, স্পেলবাউন্ট কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. সাদেকুল আরেফিন।
এমএমএ/এমআইএইচএস/জিকেএস