স্বল্প পরিসরে খুলেছে নিউ সুপার মার্কেট, নেই ক্রেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪৪ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
বিদ্যুৎ নেই। এর মাঝেই চলছে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা, মঙ্গলবার সকালের ছবি

স্বল্প পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট। তবে আশানুরূপ বিক্রি শুরু হয়নি। আগুন লাগার কারণে পুরো মার্কেটে এখনো বিদ্যুৎ নেই। আবার দোকানগুলোও গুছিয়ে উঠতে পারেনি।

গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার তিনদিন পর, গতকাল (সোমবার) আংশিকভাবে মার্কেটটির নিচতলার কিছু দোকান খুলে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কেটটির নিচতলার বেশিরভাগ দোকানই খুলেছে। চলছে মালামাল আনা নেওয়া, গোছানো ও দোকান পরিচ্ছন্নতার কাজ। অন্ধকারে মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে তীব্র গরমে মালামাল সাজাচ্ছেন বিক্রেতারা। গরমে ঘেমে অনেককে মার্কেটের বাইরে বিশ্রাম নিতেও দেখা গেছে।

পিকআপ ভ্যান, ঠেলাগাড়িতে করে ব্যবসায়ীদের মালামাল আনতে দেখা গেছে। আগুনে মার্কেটের বিদ্যুৎলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সবগুলো দোকান এখনো বিদ্যুৎহীন। তবে বিকেল নাগাদ মার্কেটে জেনারেটর চালু হওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

নিচতলায় বাঁধাই করা পেইন্টিং বিক্রি করেন রনি। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বিকেলের মধ্যে একটা লাইট, একটা ফ্যানের কানেকশন আসবে। জেনারেটর চালু হবে। আজকের মধ্যে দোতলা খুলে দেওয়া হবে।

মার্কেট খুলে দেওয়া হলেও ক্রেতার দেখা নেই মার্কেটটিতে। প্রচণ্ড গরম ও বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতারা আসছেন না বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

রনি বলেন, গতকাল সকালে দোকান খুলেছি। আসরের পরে বন্ধ করে দিয়েছি। অন্ধকারের মধ্যে কাস্টমার আসে না। গতকাল কোনো বিক্রি হয়নি। আজ ১২টার পর একটা ছবি বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, গতকাল পর্যন্ত ময়লা পরিষ্কার করেছি। এখন দেখা যাক কী হয়।

নিউ সুপার মার্কেটের নিচতলায় ঢুকতেই চোখে পড়ে গেঞ্জি, হোসিয়ারি পণ্যের দোকান অনি মনি সেন্টারের। দোকানটির বিক্রয়কর্মী শিহাব বলেন, আগুনে আমাদের পণ্যের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু ৪ দিনের বিক্রি বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

jagonews24নিউ সুপার মার্কেটের নিচতলা

তিনি বলেন, আমাদের শেষ ১০ দিনে বিক্রি হয়। গতকালও কারেন্ট নাই, কাস্টমার নাই। তাই দোকান বিকেলে বন্ধ করছি। আজকে সামান্য বিক্রি হচ্ছে।

নিউমার্কেটের বাইরের দোকান জান্নাত ব্যাগ হাউজের বিক্রয়কর্মী ইব্রাহীম হোসেন জানান, বিক্রি করে দোকান চালানোর খরচও উঠছে না।

তিনি বলেন, দোকানে প্রতিদিন খরচ হয় সাড়ে ৪ হাজার টাকার উপরে। অথচ ২ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারছি। আমাদের দোকান নিউ সুপার মার্কেটে হলেও, বাইরে হওয়ায় শুধু আগুন লাগার দিন বন্ধ ছিল। ঈদের শেষ ১০ দিনে দৈনিক ১৫-২০ হাজার টাকা সেল হওয়ার কথা। কিন্তু আগুন আতঙ্কে ক্রেতারা আসছেন না।

মার্কেটে বিদ্যুৎ না থাকা ও দোকান ভালোভাবে সাজানো না থাকায় ক্রেতার সংখ্যাও ছিল কম। বেশিরভাগ ক্রোকারিজ আইটেমের দোকানদার সাজানোর কাজে ব্যস্ত থাকায় ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতে দেখা গেছে।

কাটাবনের ব্যবসায়ী নুর আলম ঘর সাজানোর কিছু সরঞ্জাম কিনতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, দোকানগুলো এখনো রেডি করতে পারে নাই। এজন্য বিকেলের দিকে আসবো।

মজুমদার নামের আরেক ক্রেতা বলেন, কিছু কুশন কভার কিনেছি। একটা দোকান থেকেই কিনতে হয়েছে৷ অন্য দোকানগুলো সেভাবে খুলতে পারেনি।

মন্দাভাব ফুটপাতেও

নিউ সুপার মার্কেট সংলগ্ন ফুটপাতে জুতা, সেন্ডেল, ঘড়ি, ব্যাগ, সানগ্লাস বিক্রি হয়। রোজার এই সময়ে ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখর থাকে ফুটপাতটি। মঙ্গলবার ফুটপাতে কয়েকজন সানগ্লাস বিক্রেতাকে দেখা গেছে। তবে ক্রেতা ছিল খুব কম।

সাজ্জাদ নামের একজন বিক্রেতা জানান, বিক্রি একদম পড়তির দিকে। মার্কেট জমলে ফুটপাত জমবে। মার্কেটের অবস্থা খারাপ। সব ময়লা ফুটপাতে ফেলা হয়েছে। সেগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার হয়নি। কাস্টমারও কম।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, শনিবারের আগুনে নিউ সুপার মার্কেটে ১৩০০ দোকানের মধ্যে প্রায় ২৪৩টি পুড়ে গেছে। এ মার্কেটের তৃতীয় তলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এসএম/এমএইচআর/জিকেএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।