‘সব শেষ, বেতন বোনাস কার কাছে চাইবো’
‘মার্কেটের নিচতলায় আমাদের গেঞ্জি ও প্যান্টের দোকান। আমিসহ ছয়জন কর্মচারী কাজ করি। আগুনের খবরে এসে সব মাল বের করে মালিকের কামরাঙ্গীর চরের বাসায় নিচ্ছি। কিন্তু সামনে ঈদ। এমন একটা সময় আগুন লাগলো, আমরা বেতন-বোনাস কিছুই পাইনি। বোনাস চাইতেও পারব না। দেব কোত্থেকে?’
হৃদয়বিদারক কথাগুলো বলছিলেন, আগুনে পোড়া ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের নিচতলার নিবিড় ফ্যাশনের কর্মচারী মো. মাসুদ। বলেন, ‘আগুনে আমার দোকান পুড়ে গেছে। আমার স্বপ্ন শেষ।’
শুধু মাসুদ নন, তার মতো অনেকের দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
হাবিব ফ্যাশনের কর্মচারী বলেন, আমাদের সব পুড়ে গেছে। সকাল সাড়ে ৮টায় এসে কিছুই বের করতে পারিনি। কিছু পুড়ছে, কিছু ময়লা পানিতে ভিজছে। সব তো শেষ-ই হয়ে গেলো।
ব্যবসায়ী মাহবুব শেখ বলেন, আমার সব শেষ। গতকালও কোটি টাকার বেশি মাল ছিল, আজ শূন্য। কার কাছে কী চাইবো? কাকে কী বলবো জানি না, কিছুই বুঝতে পারছি না বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এ ব্যবসায়ী।
মো. সুমন নামের একজন বলেন, তিনতলায় আমার বন্ধুর দোকান ছিল। তাকে সহযোগিতা করতে এসেছি। অনেক কাপড় বের করেছি। কিছু পুড়ে গেছে।
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার বেশ কিছু ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বলেন, রাত দুইটার পর দোকান বন্ধ করে তারা বাসায় যান। ভোরবেলা আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখেন আগুন জ্বলছে।
এসব ঘটনার পেছনে কোনো নাশকতা রয়েছে কি না তা গোয়েন্দা সংস্থাকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, আমরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। একের পর এক ঘটনা ঘটছে। গোয়েন্দা সংস্থাকে আহ্বান করবো কোনো নাশকতা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউ মার্কেটের নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ৫টা ৪৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এরপর একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেখানে যোগ দেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপণী সাহায্যকারী দল। ঘটনাস্থলে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করেন স্বেচ্ছাসেবীরাও।
এমআরএম/এএসএম