‘কাল ছিলাম কোটিপতি, আজ সব শেষ’
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে লাগা ভয়াবহ আগুনে নিঃস্ব হয়ে গেছেন অনেক ব্যবসায়ী। কথা হয় ব্যবসায়ী মাহবুব শেখের সঙ্গে। ওই মার্কেটে রয়েছে তার চারটি দোকান। এসব দোকানের সব মালামাল পুড়ে গেছে। প্রতিটি দোকানে ৩০ লাখ টাকা করে অ্যাডভান্স দেওয়া। জাগো নিউজকে মাহবুব শেখ বলেন, আমার সব শেষ। গতকালও কোটি টাকার বেশি মাল ছিল, আজ শূন্য। কার কাছে কী চাইবো? কাকে কী বলবো জানি না, কিছুই বুঝতে পারছি না বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এ ব্যবসায়ী।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এসব কথা বলেন এ ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন: ‘সব পুড়ে শেষ, আমার কিছুই রইল না’
পাশের মার্কেটের গুডলাক সুজের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এখানে আগুন লাগেনি। তবে নিউ সুপার মার্কেটের ওয়াল ঘেঁষে থাকা মার্কেট হিসেবে ঝুঁকি নিতে চাই না। তাই নিরাপদ দূরত্বে মাল রেখে দিয়েছি।
একই কথা বলেন বিক্রয়কর্মী মাসুম। তিনি বলেন, আমরা মালামাল দোকানের র্যাক থেকে নামিয়ে এনেছি। অন্য মার্কেটের ক্ষেত্রে দেখেছি একটা থেকে অপরটাই আগুন লেগেছিল। তাই সতর্ক হতেই মাল নামিয়ে রাখছি।
আরও পড়ুন: ‘ঈদের আগে ফের মার্কেটে আগুন কেন’
আগুনের এ ঘটার পেছনে ফুটওভার ব্রিজ ভাঙাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, ফুটওভার ব্রিজ ভাঙার সময় শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুন লেগে যায়, যেটা আর নেভানো সম্ভব হয়নি। আমরা আপাতত ফুটওভার ব্রিজ না ভাঙার দাবি জানিয়েছিলাম। অন্তত রোজার মাসটা বন্ধের দাবি জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
কথা হয় ওবায়দুল্লাহ রনি নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। মার্কেটটির দ্বিতীয় তলায় তার পাঁচটি দোকান রয়েছে, যেখানে এক কোটি টাকার মাল ছিল। জাগো নিউজকে রনি বলেন, গত রমজানে ব্রিজ ভাঙার কথা বলেছিল, আমরা রোজায় না ভাঙার কথা বললে সিটি করপোরেশন সায় দিয়েছিল। এখন মাত্র ৭ দিন পর ঈদ, এ সময় কেন ভাঙতে হবে! রোজার পরে ভাঙলেই হতো।
তিনি বলেন, আগুনের খবরে আমরা নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন ফুটওভার ব্রিজ ভাঙার কাজ চলার সময় বিদ্যুতের শর্টসার্কিটে আগুন ধরে যায়।
আরও পড়ুন: ওভারব্রিজ ভাঙতে না পেরে পরিকল্পিতভাবে আগুন, দাবি ব্যবসায়ীদের
এর আগে শনিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউমার্কেটের নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগার তথ্য জানতে পারে ফায়ার সার্ভিস। ৫টা ৪৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এরপর একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেখানে যোগ দিয়েছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপণী সাহায্যকারী দল। ঘটনাস্থলে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করেন স্বেচ্ছাসেবীরাও।
ইএআর/কেএসআর/এএসএম