নব আলোর সন্ধানে নতুন বছর বরণ করছে ছায়ানট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৯ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০২৩
রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ছবি: জাগো নিউজ

নব আলোর সন্ধানে রমনার বটমূলে শুরু হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ-১৪৩০ উদযাপন অনুষ্ঠান। বৈশাখের এই প্রথম সকালে আজ নতুন বছরকে এক কণ্ঠে বরণ করে নিচ্ছেন ছায়ানটের শতাধিক শিল্পী। সেখানে জীর্ণতা ঘুচিয়ে নতুনের আহ্বানে নববর্ষকে স্বাগত জানাচ্ছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। বছরের প্রথম দিন নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-আত্মজাগরণের সুরবাণী দিয়ে সাজানো হয়েছে ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

সকাল সোয়া ৬টায় রাগ যন্ত্রবাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এদিন সকাল থেকে রমনার বটমূলে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের আসা শুরু হয়। এবার ১০টি সম্মিলিত গান, ১১টি একক গান, দুটি আবৃত্তি এবং সবশেষে জাতীয় সঙ্গীতে অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে।

jagonews24

প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতার ও ইউটিউব চ্যানেলগুলো।

সকালে এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই যাত্রা শুরু হয় নতুন আরেকটি বাংলা বছরের। সঙ্কীর্ণতা, কূপমণ্ডুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয় পয়লা বৈশাখ।

এদিকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে রমনা উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করছেন।

jagonews24

পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণের মাধ্যমে বাঙালি যে বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, এই স্বজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।

অন্যদিকে পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। এ দিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ।

পহেলা বৈশাখ উদযাপনে রাজধানীসহ সারাদেশে চলছে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। রাজধানীর রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আসা উপল হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, আগেও রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের উৎসবে এসেছি। এবার বিশেষ কারণে এসেছি। 

jagonews24

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুরঞ্জিত শাহা জাগো নিউজকে বলেন, এবারই প্রথমবার রমনায় এসেছি। বাংলা নববর্ষে সাম্প্রদায়িকতার যেই বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে সেটা যেন না ছাড়ায় এই প্রত্যাশা করি।

জুবায়ের ইবনে লতিফ জাগো নিউজকে বলেন, আগেও এসেছি, এবারও এলাম বটমূলের উৎসব উপভোগের জন্য। খুব ভালো লাগছে। নতুন বছরটি ভালো কাটুক সবার, এটাই চাই।

বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।

jagonews24

করোনা মহামারির কারণে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর সাড়ম্বরে রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। ১৯৬৭ সালে প্রথম রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সময় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ছায়ানট। সেই অনুষ্ঠানই বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক উৎসবকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখে।

আরএসএম/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।