রাতেও মালামাল নিয়ে রাস্তায় ব্যবসায়ীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১১ পিএম, ০৪ এপ্রিল ২০২৩
সেই ভোর ৬টায় আগুন লাগে। আগুন এতই ভয়াবহ ছিল যে, বঙ্গবাজারের প্রায় কয়েক হাজার দোকান পুড়ে গেছে। শুধু বঙ্গবাজার নয়, পার্শ্ববর্তী কয়েকটি মার্কেটে থাকা পোশাক আগুন ও পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এরমধ্যে কোনো কোনো ব্যবসায়ী তাদের কিছু মালামাল উদ্ধার করতে পেরেছেন। এসব মালামাল নিয়ে সকাল থেকে রাতেও রাস্তায় বসে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারে আগুনে পুড়ে যাওয়া কাপড় কিনছে বিদ্যানন্দ
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টায় দেখা যায়, গুলিস্তানে বঙ্গবাজারের পাশে এনেক্সকো ভবন থেকে মালামাল সরানোর কাজ চলছে। লাখ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে রাস্তায় বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। তারা এসব পোশাক কোথায় রাখবেন এ নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। এরমধ্যে আবার দেখা গেছে পিকআপ সংকট। যে কয়েকটি পিকআপ রয়েছে তাতে আবার গুনতে হচ্ছে বেশি ভাড়া। আবার কেউ রিকশা বা ভ্যানে মালামাল আশপাশের এলাকায় নিচ্ছেন।
এনেক্সকো ভবনে থাকা এনএম হাউজের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘থাকি ভাড়া বাসায়। নিজেরই থাকার জায়গা হয় না। যতটুকু মাল দোকান থেকে বের করেছি, সেটা এখন নিমু কোথায়, কিছু জানি না।’
আরও পড়ুন: দোকান থেকে বের করে আনা শেষ সম্বলটুকুও হচ্ছে চুরি
তিনি বলেন, ‘আমার দোকান এনেক্সকোর আন্ডারগ্রাউন্ডে। সেখান থেকে মালামাল বের করা হয়েছে। এখন এসব কোথায় নেবো জানি না। বেশ কয়েকজন মহাজনের সঙ্গে কথা বললাম। তাদের গোডাউনে জায়গা নেই। আবার কোনো বাসায় নিলেও হবে না। অনেক মাল ভেজা। না শুকালে পুরাই নষ্ট হয়ে যাবে। কোথায় নেবো, কি করবো, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
এই ব্যবসায়ী বলেন, এনেক্সকো থেকে মালামাল বের করা গেছে। এখানে পাঁচ-ছয় তালা ছাড়া কোনো ফ্লোর পুড়ে নাই। কিন্তু পানিতে নষ্ট হয়েছে সব মালামাল।
আরও পড়ুন: দোকান মালিকদের বাধায় ঝুঁকিপূর্ণ বঙ্গবাজার ভাঙা যায়নি: তাপস
সোহাগ রহমান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, পিকআপ ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। পরিচিত পিকআপগুলো কারো না কারো মাল নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পিকআপ ভাড়া বেড়ে গেছে। ঠিক ভাড়ায় পরিবহন করা যাচ্ছে না।
‘আমানিন শাড়ি’ নামের দোকানের ব্যবসায়ী নোমান কবির বলেন, পিকআপ ভাড়া বেশি নিচ্ছে। আমরা এখন বেকায়দায়। করার কিছু নেই।
এর আগে মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৫০টি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পাশাপাশি সেনা ও বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল, নৌবাহিনীর সম্মিলিত দল ও একটি হেলিকপ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেয়। কিন্তু ততক্ষণে পুরো বঙ্গবাজার পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজারের বেশি ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন। কোনো কোনো ব্যবসায়ী একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
এনএইচ/জেডএইচ/এএসএম