পাইলটের মৃত্যু

গালফ এয়ারের ভূমিকা তদন্তে সিভিল এভিয়েশনকে আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৩৫ পিএম, ০৩ এপ্রিল ২০২৩

ভুল চিকিৎসায় গালফ এয়ারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ আল হিন্দির মৃত্যুর তদন্ত ও বিমানসংস্থাটির অবহেলার দায়ে ব্যবস্থা নিতে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (সিএএবি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তার বোন তালা এলহেন্ডি। সোমবার (৩ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তালা এলহেন্ডি বলেন,‘আমি ৭ মার্চ সিএএবি-কে ই-মেইল করে দায়িত্বে অবহেলার জন্য গালফ এয়ারের ভূমিকা তদন্ত করার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু এভিয়েশন অথরিটি বিষয়টি নিয়ে কোনো উত্তর দেয়নি এখনো।’

আরও পড়ুন> ভুল চিকিৎসায় গালফ এয়ারের পাইলটের মৃত্যু, দাবি বোনের

গত ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাইলট ইউসুফ হাসান আল হিন্দি। ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালকে দায়ী করে হাসপাতালটির লাইসেন্স বাতিল ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তালা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে ইউসুফ হাসান আল হিন্দি ঢাকার মেরিডিয়ান হোটেলে ছিলেন। দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে তিনি ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হয়ে বের হয়ে যান। ভোর ৪টার দিকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্নের সময় অসুস্থ হলে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি পরপর চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হন। এরপর ১৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে মারা যান ইউসুফ হাসান।

এলহেন্ডি বলেন, ‘যখন আমার ভাইয়ের মরদেহ আসে, তখন গালফ এয়ারের কর্মীরা সেখানকার চিকিৎসকদের রিপোর্ট দেখাননি। তারা থাকলে, চিকিৎসক কর্মীদের বলতেন যে রিপোর্টগুলো সঠিক নয়। যেহেতু তারা তা করেননি, আমরা নিশ্চিত যে এর পিছনে একটি খারাপ উদ্দেশ্য ছিল এবং তারা তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছিলেন।’

আরও পড়ুন>ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, ৪ চিকিৎকের বিরুদ্ধে মামলা

তিনি বলেন, গালফ এয়ার তার ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে সঠিক যুক্তি খুঁজে না পেয়ে তাড়াহুড়ো করে কবর দিয়েছে। ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে তিনি গালফ এয়ারের ভূমিকা তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা চেয়ে গত ২৮ মার্চ সিএএবির বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন দায়েরও করেন। উল্লিখিত রিট পিটিশনের জন্য একটি স্লিপ ২ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়েছে।

এলহেন্ডির মতে, ইউনাইটেড হাসপাতাল এবং গালফ এয়ার উভয় কর্তৃপক্ষেরই অবহেলা ছিল। গালফ এয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, তখন তারা তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বলেও অভিযোগ করেন তালা।

এলহেন্ডি গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসেছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তার ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনাটির মামলা সংক্রান্ত তথ্য ও নথি সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিনি হাসপাতালের কোনো সহযোগিতা পাননি বলেও দাবি করেন।

তিনি আরও দাবি করে বলেন, ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় তার আইনজীবীকে নিয়ে গুলশান থানায় গেলেও থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি। পরে ১৪ মার্চ ঢাকা মহানগর ২১ নম্বর আদালতে মামলা করেন তিনি।

এরপর আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২ এপ্রিল, দিন ধার্য ছিল। তবে পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করার ব্যাপারে সময় চেয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এলহেন্ডির আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুবও উপস্থিত ছিলেন।

এএএম/এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।