মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনা
মারা গেছেন স্ত্রী-কন্যা, একমাত্র ছেলেও হাসপাতালে
গোপালগঞ্জে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তারিকুল ইসলাম। দুই বছর আগে মারা যান তারিকুলের মেয়ে তাহমিনা তমা। গত বছর ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যান স্ত্রী জাহানারা। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে গড়ে ওঠা সুখের সংসার মাত্র দুই বছরের মধ্যে যেন শূন্য হতে চলছে। তারিকুলের আপনজন বলতে বেঁচে থাকা একমাত্র ছেলেও আজ মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে তারিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। একমাত্র ছেলে বদরুদ্দোজাকে (৩০) হারানোর আশঙ্কায় বারবার বিলাপ করছেন তিনি।
জাগো নিউজকে তারিকুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেছে। গত বছর আমার স্ত্রীও ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। পরিবার বলতে আমার একমাত্র ছেলেটাই এখন রয়েছে। আমার একমাত্র ছেলেটাও অ্যাকসিডেন্ট করলো! ভাগ্যে থাকলে কিছু করার নেই। এখন তো দোয়া করা ছাড়া কিছু করতে পারবো না।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৯
তিনি বলেন, আমার ছেলে ঢাকায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। সাপ্তাহিক ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিল। ভোরে বাসে ওঠে ঢাকায় আসার জন্য। সকালে আমি ফোন পাই ছেলে নাকি অ্যাকসিডেন্ট করেছে। এরপর তাকে ঢাকায় আনা হয়। খবর শুনে আমিও গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছি।
বদরুদ্দোজার দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন তার নিকটাত্মীয়রাও। জরুরি বিভাগে বদরুদ্দোজার চিকিৎসা চলছে বলে জানান তারা।
এদিকে, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ভাঙ্গা-মাওয়া-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। রোববার সকাল সোয়া ৮টার দিকে উপজেলার কুতুবপুর এলাকায় খুলনা থেকে ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের বাস খাদে পড়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। এ পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে ১৭ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঢামেকে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরএসএম/কেএসআর/জেআইএম