ডাচ্-বাংলার টাকা ছিনতাই

মূল মাস্টারমাইন্ড গ্রেফতার, আরও ৫৮ লাখ টাকা উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩৯ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২৩

রাজধানীর উত্তরায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত মাস্টারমাইন্ড আকাশসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় ৫৮ লাখ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. হৃদয় (২১), মো. মিলন মিয়া (২৯) ও মাস্টারমাইন্ড আকাশ।

এর আগে গত রোববার (১২ মার্চ) দুই কোটি ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। ছিনতাই হওয়া সোয়া ১১ কোটি টাকার মধ্যে তিন দফায় ৭ কোটি এক লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার হলো। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মাস্টারমাইন্ড আকাশসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন>> ডাচ্-বাংলার টাকা ছিনতাই: নজরদারিতে ৭ জন, গ্রেফতার যেকোনো সময়

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবিপ্রধান বলেন, টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। কেউ ছিল পরিকল্পনাকারী, কেউ মোবাইল ও সিম সংগ্রহকারী, কেউ শুধু ঘটনার সময় ভাড়াটে হিসেবে কাজ করে।

মূলপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকারী হিসেবে কাজ করে ৪/৫ জন। তাদের মধ্যে আকাশ ও সোহেল রানা নামে দু'জন ডাকাতির ছক সাজায়।

তিনি বলেন, ডাকাতির মূলহোতা আকাশ টাকা লুটের পর মাইক্রোবাসে উঠতে না পারলেও সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আকাশ তার পূর্বপরিচিত ইমন মিলনের কাছে ডাকাতির বিষয়টি শেয়ার করে এবং তাকে এ কাজে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেয়। তাকে তারা জনবল সংগ্রহের দায়িত্ব দেয়। ইমন মিলন তার পূর্বপরিচিত সানোয়াকে বিষয়টি অবগত করে এবং জনবল জোগান, সিম সংগ্রহ ও মোবাইল ফোন কেনার দায়িত্ব দেয়।

সানোয়ার আটটি নতুন সিম এবং মোবাইল সেট জোগাড় করে এবং তার নিজ জেলা সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা থেকে ডাকাতির কাজে মোট নয়জন সদস্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে তারা প্রত্যেকে ঘটনার দু’দিন আগে ঢাকায় জড়ো হয়। পরিকল্পনাকারীরা তাদের ঢাকায় এনে নতুন কাপড় ও জুতা কিনে দেন।

আরও পড়ুন>> অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই

 মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মাস্টারমাইন্ড আকাশ ও সোহেল রানা ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা লুট করার বিষয়টি ইমন মিলন ও সানোয়ারের কাছে গোপন রাখে। তারা জানায়- হুন্ডির কিছু টাকা লুট করবে সেখানে প্রশাসনের লোক থাকবে। পরবর্তীতে ঘটনার দিন সবাই একত্রিত হয়ে মাইক্রোবাসে ওঠার পর বুঝতে পারেন বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে। ডাকাতির পর মূলহোতা আকাশ মাইক্রোবাসে উঠতে না পারায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

এর আগে ঘটনার দিন (৯ মার্চ) রাতে মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসের বাদী হয়ে ডিএমপির তুরাগ থানায় মামলা করেন। সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ৯ মার্চ সকাল ৭টার পরে রাজধানীর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে বেসরকারি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়ি থেকে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই হয়। দিনের আলোতে প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে নজিরবিহীন এ ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে মাঠপর্যায়ে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উত্তরা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া টাকাভর্তি চার বক্সের মধ্যে তিনটি উদ্ধারের কথা জানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় সাতজনকে।

টিটি/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।