গুলিস্তানে বিস্ফোরণ
‘ক্যাফে কুইন’ ভবনে বেশিরভাগই স্যানিটারি ওয়্যারের দোকান
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে যে ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, ওই ভবনের নাম ‘ক্যাফে কুইন’। সাততলা এ ভবনের নিচতলায় মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত এ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী। তবে নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্যাফে কুইন ভবনে বেশিরভাগই স্যানিটারি ওয়্যারের দোকান। ভবনের পাশে ব্র্যাক ব্যাংকের ভবন। ক্যাফে কুইন ভবনের বিস্ফোরণে ব্র্যাক ব্যাংক ভবনসহ আশপাশের স্থাপনারও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. সম্রাট বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার দিকে হঠাৎ বিকট আওয়াজ শুনতে পাই। শব্দ পাওয়ার সঙ্গে মানুষকে ছোটাছুটি করতে দেখি। অনেক মানুষকে ক্যাফে কুইন ভবনের সামনে পড়ে থাকতে দেখি। তারা সঙ্গে সঙ্গে মারা যান।’
আরও পড়ুন>> গুলিস্তান বিস্ফোরণ: আরও তিন মরদেহ উদ্ধার, নিহত বেড়ে ১৪
তিনি বলেন, ‘ক্যাফে কুইন ভবনের নিচতলার শাটার দরজা ভেঙে অনেক দূর চলে যায়। এখানে স্যানিটারির দোকান বেশি। এসময় রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ভবনের পাশে পানের দোকান, কুরিয়ার সার্ভিস আছে, সেগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, বিস্ফোরণে ভবনেরর পাঁচতলা পর্যন্ত সব ফ্লোরই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে ভবনের জানালার কাচ। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা আঁচ করা যাচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা দেখেও। ভেঙেচুরে সব তছনছ হয়ে গেছে। রাস্তায় চলাচল করা একটি যাত্রাবাহী বাসও বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসটির জানালার কাচ ভেঙে গেছে। আহত হয়েছেন বাসে বসে থাকা যাত্রীরাও।
ক্যাফে কুইন ভবনের সামনে লেবু বিক্রি করতেন দিলীপ কুমার দাস। তার খোঁজ করতে এসেছেন ভাতিজা হৃদয়। কান্না করতে করতে হৃদয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘চাচা এখানে লেবু এবং অন্যান্য ফল বিক্রি করতেন। বিস্ফোরণের পর খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। মোবাইলে কল দিচ্ছি। কিন্তু চাচারে পাই নাই। আপনারা বলেন, চাচা কে কোথায় গেলে পাবো।’
এদিকে, বিস্ফোরণের পর সেখানে উদ্ধারকাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা। বিস্ফোরণ ঘটা ভবনের সামনে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। কিছুক্ষণ পরপরই ভবন থেকে মরদেহ বের করে আনছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
আরএমএম/এএএইচ/এএসএম